ডার্বি! এটা শুধু একটা ম্যাচ নয়। বাঙালির চিরন্তন আবেগ। ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে যখনই চির-প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দল-ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে তখনই আবেগের বিস্ফোরণের সাক্ষী থেকেছে ময়দান। সাম্প্রতিককালে, তা কলকাতার গন্ডি ছাড়িয়ে ভিনরাজ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। শিলিগুড়ি হোক কিংবা ভুবনেশ্বর, এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে গুয়াহাটি, বাঙালির এই আবেগের সাক্ষী থেকেছে তারাও। আর এই আবেগকে কাজে লাগিয়েই মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছেন বিভিন্ন টুর্নামেন্টের আয়োজকরা। ডুরান্ড কাপ হোক অথবা সুপার কাপ ডার্বি ম্যাচ যেভাবেই হোক আয়োজন করতে বদ্ধ-পরিকর তারা।
সেইজন্য, কোনওক্ষেত্রে তো নকআউট পর্যন্তও অপেক্ষা করতে রাজি নয় আয়োজকরা। সম্প্রতি, ঘোষিত সুপার কাপের সূচিতেও তার অন্যথা হয়নি। গ্রুপ-এ’র শেষ ম্যাচে আগামী ৩১ অক্টোবর মুখোমুখি হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান সুপার জায়েন্ট। তবে শুধুই এবারের সুপার কাপ কেন চলতি মরসুমের প্রথম প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্ট ডুরান্ড কাপেও একই ঘটনার সাক্ষী থেকেছে ফুটবলপ্রেমী দর্শকরা।
Advertisement
সেবার গ্রুপ পর্বে হয়তো দুটি দলকে একসঙ্গে রাখা হয়নি। কিন্তু, ফাইনাল অবধি এই ম্যাচের জন্য কোনওভাবেই অপেক্ষা করতে রাজি ছিলেন না উদ্যোক্তারা। সেইমতো, গ্রুপ পর্ব শেষে কোয়ার্টার ফাইনালেই ডার্বি আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় ডুরান্ড কমিটি। এরফলে, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি সূচি ঘোষণা করা হয় পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী? নাকি পুরোটাই কাকতালীয়? বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন ফেডারেশনের এক কর্তা।
Advertisement
তিনি বলেন, এটা আয়োজকদের পূর্ব -পরিকল্পনা কি না তা নিশ্চিন্তভাবে বলতে পারবেন না তিনি। ওই কর্তা বলেন, সাধারণত লটারির মাধ্যমে সূচি নির্ধারিত হয়ে থাকে। তা লাইভও করা হয়। বিষয়টা ফেডারেশনের টুর্নামেন্ট কমিটি ভালোভাবেই পর্যবেক্ষণ করে। কিন্তু, একইসঙ্গে ওই কর্তা আরও বলেন, ফুটবলের প্রচার এবং প্রসার বৃদ্ধির জন্য মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলকে একই গ্রুপে খেলানো হলে ভুলের কিছু নেই।
তবে, আয়োজকদের এই উদ্যোগে আদৌ কি লাভ হচ্ছে ভারতীয় ফুটবলের? হয়তো সমর্থকদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে তাদের প্রচুর মুনাফা আসছে। পাশাপাশি, প্রচারও অনেকটাই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু, ফুটবলের কি কোনও উন্নতি হচ্ছে? যদিও, তাতে বিশেষ কিছু যায় আসে না উদ্যোক্তাদের। তাই মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে আপাতত যেকোনও টুর্নামেন্টের ‘পরিকল্পিত’ সূচিতে হয়তো বারবার ডার্বি ম্যাচের সাক্ষী থাকবে ফুটবলপ্রেমীরা বাঙালিরা। তাতে কি ফুটবলের কোনও লাভ হবে? তার উত্তর দেবে সময়।
Advertisement



