• facebook
  • twitter
Saturday, 16 August, 2025

আরসিবি-র বিজয়োৎসবে পদপিষ্ট হয়ে মৃত ১১

বেঙ্গালুরুর রাজপথে বিজয় মিছিল বের হবে না। কথা ছিল হুডখোলা জিপে খেলোয়াড়দের বেঙ্গালুরু শহরে প্রদক্ষিণ করানো হবে। যদি মিছিল বের হয়, সেক্ষেত্রে যানজটের সারা বেঙ্গালুরু স্তব্ধ হয়ে যাবে।

নিজস্ব গ্রাফিক্স

বেঙ্গালুরু, ৪ জুন— আইপিএল ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিজয় উৎসবকে কেন্দ্র করে রক্ত ঝরল বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে কমপক্ষে ১১ জন ক্রীড়াপ্রেমী প্রাণ হারান। সারা বেঙ্গালুরু জুড়ে শুধুই কান্না। কাঁদছে ক্রিকেট মহল। এরকম কান্নার বিজয় উৎসব দেখার জন্য কেউই ছুটে আসেননি স্টেডিয়ামে। স্টেডিয়ামে প্রবেশ করার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সেই অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য পুলিশের তৎপরতা এমন জায়গায় পৌঁছয়, যা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হয়নি। একের পর এক ক্রিকেটপ্রেমী রাস্তার উপরে পড়ে যান। তাঁদের উপর দিয়েই উল্লাসে মাতোয়ারা মানুষ ছুটতে থাকেন। তারই মধ্যে কান্নায় অনেকেই ছোটাছুটি করতে থাকেন। প্রিয়জনকে কেউ খুঁজে পাচ্ছেন না, আবার কাউকে দেখছে সামনে তাঁর নিথর দেহটা। চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে মৃত্যুমিছিল তৈরি হয় স্টেডিয়াম চত্বরে। একদিকে যখন মর্মান্তিক দৃশ্য, তখন তা ভ্রূক্ষেপ না করে স্টেডিয়মের ভিতরে জমকালো অনুষ্ঠানে সামিল হলেন খেলোয়াড় থেকে কর্মকর্তারা সবাই। এমনকি কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমারও ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। তিনি নাকি সেই সময় ক্রিকেটপ্রেমীদের মৃত্যুর কোনও খবরই পাননি বলে জানিয়েছেন। প্রশাসনিক দূরদর্শিতার অভাব এবং অবহেলার কারণে বিজয় উৎসবকে কেন্দ্র করে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটল। আহত হয়েছেন প্রচুর মানুষ।

পুলিশের পক্ষ থেকে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল, বেঙ্গালুরুর রাজপথে বিজয় মিছিল বের হবে না। কথা ছিল হুডখোলা জিপে খেলোয়াড়দের বেঙ্গালুরু শহরে প্রদক্ষিণ করানো হবে। যদি মিছিল বের হয়, সেক্ষেত্রে যানজটের সারা বেঙ্গালুরু স্তব্ধ হয়ে যাবে। তখন বিরাট সমস্যার মধ্যে পড়তে হত। আহমেদাবাদ থেকে চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড় ও কোচকে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে বুধবার স্বাগত জানাতে মন্ত্রী যেমন উপস্থিত ছিলেন, তেমনই ছিলেন প্রচুর সমর্থকরাও। সেখানেই খেলোয়াড়দের ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। তারপর সেখান থেকে হোটেলের উদ্দেশে রওনা দেন বিরাট কোহলি – রজত পাতিদাররা। মিছিল বাতিলের কথা জানাজানি হতেই বিজয়ী দলকে দেখতে রাস্তার ধারে ভিড় জমিয়েছিল প্রচুর মানুষ। পাশাপাশি, হোটেলেও তাঁদের জন্য জমকালো সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছিল হোটেল কর্তৃপক্ষের তরফে। সেখানে আইপিএল ট্রফির আদলে তৈরি কেক কেটে উৎসবে মাতেন দলের খেলোয়াড় থেকে শুরু করে কোচ-কর্তা সকলেই।

এরপর বিকেলে বিধান সৌধে পৌঁছান কোহলিরা। আরসিবি দলের খেলোয়াড়দের পরনে ছিল লাল রঙের ‘চ্যাম্পিয়ন্স‘ লেখা জামা। কোহলিদের সংবর্ধনা জানাতে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। সঙ্গে ছিলেন কর্ণাটকের অন্যান্য মন্ত্রীরাও। সংবর্ধনা মঞ্চে খেলোয়াড়দের উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান জানানো হয়।

তবে, পুলিশি ব্যর্থতায় যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল, তা ঘিরে আনন্দোৎসব পরিণত হয় শোকে ।

News Hub