‘আরএসএস জানে মোদি নয় কাজ করবে মমতাই’

Written by SNS March 23, 2024 12:15 pm

জনজোয়ার কাটোয়ায়, মধ্যমণি অভিষেক

নিজস্ব প্রতিনিধি – স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই কাটোয়ার মাটিতে বাজিমাত তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় জনগর্জন সভা থেকে জেলায় রাজনৈতিক পারদ চড়ালেন তৃণমূল সেনাপতি৷ মূলত কাটোয়ায় বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকার এবং বর্ধমান-দুর্গাপুরের প্রার্থী কীর্তি আজাদের সমর্থনে প্রচারে নেমেছিলেন অভিষেক৷ কাটোয়ার মঞ্চ থেকে বিজেপিকে ‘বসন্তের কোকিল’ বলে কটাক্ষ৷

অভিষেক ফের নিজের ‘ওপেন চ্যালেঞ্জ’ এর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বদের৷ ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা এবং সড়ক যোজনার বরাদ্দ নিয়ে বিজেপি নেতাদের খোলাখুলি বিতর্কে বসার আহ্বান জানিয়ে রেখেছেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্ত্ত কোথায় বিজেপি নেতা?

অভিষেকের কথায়, ‘‘আমি বলেছিলাম, আসুন, বিতর্কে বসুন৷ কিন্ত্ত ২০০ ঘণ্টা কাটতে চলল, বিজেপির কারও সাহস হল না আমার মুখোমুখি বসার৷ কারণ বিজেপিও জানে প্রধানমন্ত্রী অসত্য বলেছেন৷ ওরা পারবে না৷’’ পাশাপাশি মনে করিয়ে দিয়েছেন গত লোকসভা ভোটে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে জয়ী বিজেপির সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার নিষ্ক্রিয়তার কথা৷ এ প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, “পাঁচ বছরে এক বারও বিজেপির সাংসদ কোথাও উন্নয়ন নিয়ে বৈঠক করেছেন? করেননি৷ কারণ ওদের গ্যারান্টি মানে জিরো ওয়ারেন্টি৷ আর দিদির গ্যারান্টি মানে ১০০ শতাংশ ওয়ারেন্টি৷ যা বলেন, তা-ই করেন৷” এমনকি তিনি এও বলেন, “জনগর্জন কাকে বলে কাটোয়ার মাঠ দেখিয়ে দিয়েছে৷ মাঠে যাঁরা আছেন তাঁরাই ভোট দিলে বিজেপি ভোকাট্টা হয়ে যাবে!”

বাংলায় হারার পর কেন্দ্র এক পয়সাও দেয়নি৷ কেউ দেখাতে পারলে রাজনীতি ছেডে় দেব” বকেয়া ইসু্যতে ফের বিজেপিকে নিশানা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বললেন, “গরিবের ন্যায্য দাবি নিয়ে দিল্লি গিয়েছিলাম৷ বাংলার প্রাপ্য টাকা ফিরিয়ে আনবই৷ কিন্ত্ত তারা অপমান, লাঞ্ছনা ছাড়া কিছুই দেয়নি৷” বিজেপি ফের একবার ক্ষমতায় এসে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড ও যুগান্তকারী লক্ষ্মীরভাণ্ডার বন্ধ করার চেষ্টা করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ অভিষেকের৷ বসিরহাটের মঞ্চ থেকে যে প্রতিশ্রুতি যুবরাজ দিয়েছিলেন তা পুনরায় মনে করিয়ে দেন৷ তিনি সাফ জানান, আবাসের জন্য বাংলার মানুষকে আর কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হবেনা৷

আগামী ৩১ ডিসেম্বেরের মধ্যে বাডি়র টাকার প্রথম ইনস্টলমেন্ট আবেদনকারীদের অ্যাকাউন্টে চলে যাবে বলেও আশ্বাস দিলেন অভিষেক৷ এদিন ফের একবার কেন্দ্রীয় সরকারকে রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আসার চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দেন অভিষেক৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০২১ এর বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল রিপোর্ট কার্ড দেখিয়েছিলো৷ পরবর্তী বিধানসভা ভোটের আগেও তা দেখাবে৷ এবার বিজেপির উচিৎ নিজেদের রিপোর্ট কার্ড দেখানো৷

পাশাপাশি কেন্দ্রের সিএএ নিয়েও সরব হন তৃণমূল যুবরাজ৷ কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, সিএএ একটি নতুন ‘জুমলা’৷ সিএএ আইন পাশ করেছে ২০১৯ সালে কিন্ত্ত এর নিয়মাবলী তৈরি করতে লেগে গেছে ৫ বছর৷ সিএএ এর মাধ্যমে কিভাবে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে তার স্পষ্ট উল্লেখ নেই৷ বরং পাতার পর পাতা ফর্ম ভরার জন্য আবেদন করতে বলা হচ্ছে৷ আসামে এইভাবেই ১২ লক্ষ নাগরিক ডিটেনশন ক্যাম্পে গেছেন কিন্ত্ত আসামের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী কিছুই করতে পারেননি৷ কলকাতার এক যুবকের মৃতু্যকে কেন্দ্র করে বিজেপির এই সিএএ ফাঁদে পা না দেওয়ার বার্তাই দেন অভিষেক৷ তিনি বলেন, “গতকাল ৯৮ নম্বর ওয়ার্ড টালিগঞ্জে, একজন তরতাজা তরুণ কাগজ খুঁজে পাচ্ছে না বলে আতঙ্কে ভয়ে আত্মহত্যা করেছে, এনআরসি-র ভয়ে, সিএএ-র ভয়ে৷”

কোনো প্রতিশ্রুতিই পূরণ করতে পারেনি বিজেপি৷ বরং দেশে মূল্যবৃদ্ধির মতো সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, নারী নির্যাতন বেড়েছে, রান্নার গ্যাসের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০০ থেকে ১১০০ টাকা, শিশু শিক্ষার হার কমেছে৷ তারা যে বাস্তবেই ‘বসন্তের কোকিল’, জায়ান্ট স্ক্রিনে একটি ভিডিও চালিয়ে তার প্রমাণ দেখান অভিষেক৷