কোচবিহারে এসেও জলপাইগুডি়র ঝড় নিয়ে নিশ্চুপ প্রধানমন্ত্রী

Written by SNS April 5, 2024 2:08 pm

নিজস্ব প্রতিনিধি – বৃহস্পতিবার কোচবিহারের মাটিতে পা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ তারই পার্শ্ববর্তী জেলা জলপাইগুড়ির ভয়ঙ্কর ঝড় ও তাতে বিপর্যস্ত মানুষদের নিয়ে কোনো কথাই বলতে শোনা গেলো না প্রধানমন্ত্রীকে৷ উত্তরবঙ্গের মানুষ বারংবার আস্থা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রীর ওপর৷ তার বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে সামান্য সহানুভূতিও পেলেন না – তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে এভাবেই কেন্দ্রকে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ৷ উত্তরবঙ্গ থেকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘দ্বিচারিতা’, ‘ভিত্তিহীন কুৎসা’, ‘অমানবিক’ বলে আখ্যা দেন কুনাল৷ অভিষেকের দেওয়া ‘ওপেন চ্যালেঞ্জ’ এর ২১ দিন পার!প্রধানমন্ত্রী বাংলায় এসেছেন, তাও শ্বেতপত্র প্রকাশ করলেন না উল্টে তিনি দাবি করলেন ৪০ লক্ষ বাড়ি দিয়েছেন৷ বাস্তবে তাঁরই বিজ্ঞাপন অনুযায়ী ১১ লক্ষ বাড়ির তালিকায় কেবল ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার বাড়ির অনুমোদন হয়েছে৷ এটি নিতান্তই মানুষকে ভুল বোঝানোর কৌশল, দাবি কুনালের৷

‘মোদীর পরিবার অসাধুদের পরিবার’ বলে কটাক্ষ কুনালের৷ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা থেকে প্রফুল প্যাটেলদের বিজেপি কর্তৃক ‘চোর’ বলা হয়েছিল কিন্ত্ত এরাই নিজ দলত্যাগ করে বিজেপিতে গেলে বড়ো রাজনৈতিক পদে আসীন হয়েছেন৷ সিএএ নিয়ে কেন্দ্রকে কটাক্ষের সুরে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে কুনাল বলেন, এমন কোন কাগজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে আছে যাঁর জন্য তিনি নাগরিক কিন্ত্ত সাধারণ মানুষের কাছে নেই ? কোনো বিজেপি নেতৃত্ব সিএএ এর জন্য ফর্ম ফিলাপ করলে বুঝবো তিনি নাগরিক নন, তাহলে তাঁর নির্বাচনে দাঁড়ানোর অধিকার থাকবে না৷ তাঁকে অবিলম্বে দায়িত্বপ্রাপ্ত পদ থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে৷ পাশাপাশি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, “জোশ ছিল না বক্তৃতায়, বুঝতে পেরেছেন বাংলায় ভরাডুবি হবে৷ বিজেপি এনডিএর ২০০ পেরোনোর ক্ষমতা নেই৷” নিশানা করতে ছাড়েন নি বাম কংগ্রেস কেও৷ “বাংলায় বিজেপির দু ভাই বাম এবং কংগ্রেস৷ বাম, কংগ্রেস যে ফ্রন্ট হয়েছে বিজেপি তার চেয়ারম্যান” দাবি কুনালের৷ বিজেপি নেতৃত্ব শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে ফের তোপ দাগলেন ব্রাত্য৷ তাঁর মতে, তিনিই বলেছিলেন সিএএ এর জন্য আবেদন করবেন৷ এখনও তা করেন নি৷ আসলে কেন্দ্র সরকারের পোর্টালকে কেন্দ্রের মন্ত্রী নিজেই বিশ্বাস করতে পারছেন না৷ সিএএ, এনআরসি এর নাম করে কেন্দ্র সরকার অনুপ্রবেশকারীদেরকেই বৈধতা দিতে চাইছে এবং আসল শরণার্থীদেরই উপেক্ষা করতে চাইছে৷

দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও তোপ দাগলেন কুনাল৷ দিলীপের বক্তব্য, বাংলায় দাদাগিরি কেবল তিনি করবেন৷ এ প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে কুনাল বলেন, দাদাগিরি করতে হলে জি বাংলার সাথে কথা বলুন৷ নতুন জায়গায় গেছেন, পোস্টার ফেস্টুন মারার লোক নেই তাই চাপে মানসিক বিষাদে দু চারটে খারাপ কথা বলছেন৷ ব্রাত্যও সুর মিলিয়ে বলেন, তিনি ছোড়দা৷ তাঁর দুই দাদা ইডি এবং সিবিআই৷ বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা কোচবিহারের প্রাক্তন এসপি দেবাশীষ ধর বলেন, শীতলকুচি কাণ্ডে বাংলার এক বড়ো মাথার বিরুদ্ধে এসআইআর করা আছে৷ এ প্রসঙ্গে ব্রাত্য চড়া সুরে জবাব দিয়েছেন, “হিম্মত থাকলে নাম টি বলে দেখাক৷” গুজরাট তদন্তকারী সংস্থা বাংলা থেকে মাদক বাজেয়াপ্ত করেছে এবং তার সাথেই পরোক্ষ ভাবে যোগ পাওয়া যাচ্ছে শেখ শাহজাহানের৷ কুনাল এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, বাংলার মাদক উদ্ধারের সাথে গুজরাট তদন্তকারী সংস্থার যোগসূত্র কোথায়? গুজরাটে কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না তার তদন্ত প্রয়োজন৷ প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলীর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত চুরির দায় নিক নয়তো মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করুক৷ এ প্রসঙ্গে পাল্টা জবাব দিয়ে কুনাল বলেন, মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর বিজেপির কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো ক্রিমিনাল মামলা থাকলে সেই মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া অবধি তিনি যেন বিজেপির হয়ে ভোটে না দাঁড়ান৷ মহাম্মদ সেলিমকে কটাক্ষ করে কুনাল বলেন, সংখ্যালঘু ভোট যেখানে সেখানেই দাঁড়ান সেলিম কিন্ত্ত তাতেও জিততে পারেন না বরং “ঘুরে ঘুরে হারেন”৷