বরাহনগর উপনির্বাচনে বামেদের প্রার্থী তন্ময়

Written by SNS April 11, 2024 12:01 pm

নিজস্ব প্রতিনিধি– বিধানসভা উপনির্বাচনে বরাহনগরে সিপিএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য৷ তৃণমূলের সায়ন্তিকা ও বিজেপির সজলের বিরুদ্ধে বামেদের বাজি ‘ঘরের ছেলে’ তন্ময় এর আগে উত্তম দমদমের বিধায়ক ছিলেন৷ ২০১৬ সালে তৃণমূলের চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও বিজেপির অর্চনা মজুমদারকে হারিয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি৷ তবে ২০২১ সালের ভোটে হেরে যান৷ বরাহনগরে ‘ঘরের ছেলে’কে প্রার্থী করল সিপিএম৷ লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম দফায় বরাহনগর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে৷ ওই আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ও বিজেপি সজল ঘোষকে৷ বামেরা প্রার্থী করল দলের প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যকে৷ তন্ময় এর আগে উত্তম দমদমের বিধায়ক ছিলেন৷ ২০১৬ সালে তৃণমূলের চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও বিজেপির অর্চনা মজুমদারকে হারিয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি৷ এরপর ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তন্ময়কে আবার উত্তম দমদমেরই প্রার্থী করে দল৷

কিন্ত্ত সে বার চন্দ্রিমার কাছে পরাজিত হন তিনি৷ সম্প্রতি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূল ছেডে় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাপস রায়৷ লোকসভা নির্বাচনে উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থীও তিনি৷ এর ফলে বরাহনগরের আসনটি বিধায়ক শূন্য হয়ে পডে়৷ তাই সেখানে উপনির্বাচন হচ্ছে৷ তন্ময় বরাহনগরের বাসিন্দা হওয়ায় তাঁকেই ওই আসনে প্রার্থী করল বামেরা৷ গত বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের বেনজির বিপর্যয়ের পরে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সংঘাতে জডি়য়েছিলেন তন্ময়৷ প্রকাশ্যে দলের নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে তোপ দাগায় তিন মাস মুখ খুলতে নিষেধ (সেন্সর) করা হয়েছিল তাঁকে৷ বিধানসভা নির্বাচনে ব্যর্থতার দায় দলীয় নেতৃত্বের ঘাডে় চাপিয়েছিলেন তিনি৷ বলেছিলেন, ‘‘দলের এই ব্যর্থতার দায় নেতৃত্বের৷ আমাদের নয়৷

নিচুতলার কর্মীদেরও নয়৷ লোকসভায় শূন্য হয়ে যাওয়ার পরেও সেই দায় কেউ নেননি৷ বিধানসভায় হারের পরেও কেউ দায় নেবেন না৷ শুধু স্তালিন কপচালে হবে না৷ এটা স্তালিনের যুগ নয়৷’ বামফ্রন্টের সঙ্গে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর জোট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তন্ময়৷ সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দলীয় মুখপত্রে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিল সিপিএম৷ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সম্পাদকের নামে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘তন্ময় ভট্টাচার্য যা বলেছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত মত৷ পার্টি পরিচালনা বা নেতৃত্বের বিষয়ে যা বলেছেন সে ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’৷

তবে এই বিবৃতি প্রকাশের পরেও নিজের মন্তব্যে অটল ছিলেন তন্ময়৷ সিপিএম উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে জায়গা পাওয়া নিয়েও বছর দুয়েক আগে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বিবাদে জডি়য়েছিলেন তন্ময়৷ জেলা সম্মেলনের পরে উত্তর ২৪ পরগনায় যে জেলা সম্পাদকমণ্ডলী গঠিত হয়েছিল, সেখানে পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসেবেই জায়গা পেয়েছিলেন তন্ময় ও অশোকনগরের নেতা বাবুল কর৷ কিন্ত্ত দলের সর্বক্ষণের কর্মী না হওয়া সত্ত্বেও তন্ময়কে কেন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীতে রাখা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল দলের মধ্যেই৷

যদিও তন্ময় আগেও ওই কমিটিতে ছিলেন৷ শেষ পর্যন্ত রাজ্য নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করে জানিয়েছে, তাঁরা সর্বক্ষণের কর্মীর নীতিই মানবেন৷ এর পর সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে জেলা কমিটির বৈঠকে তন্ময় ও বাবুলকে পূর্ণাঙ্গ সদস্য থেকে সরিয়ে আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়৷ দলীয় সূত্রে খবর, ওই সিদ্ধান্তের কথা শুনে তিনি আর সক্রিয় রাজনীতি করতে চান না জানিয়ে হাতজোড় করে বৈঠক ছেডে় বেরিয়ে গিয়েছিলেন৷ পরে অবশ্য তাঁর সঙ্গে কথা বলেন রাজ্য নেতৃত্ব৷ সাম্প্রতিক সময়ে টিভির পর্দায় দেখা যায় তন্ময়কে৷ অংশ নেন বিতর্ক সভাগুলিতে৷ সেই তন্ময়কে বরাহনগর উপনির্বাচনে প্রার্থীও করল সিপিএম৷