পুরুলিয়ায় রামনবমী নিয়ে শান্তিমিছিলের ডাক মুখ্যমন্ত্রীর

Written by SNS April 8, 2024 2:28 pm

নিজস্ব প্রতিনিধি— এবারের লোকসভা নির্বাচনে অনেক প্রার্থীই নূতনত্ব আনছেন৷ বিহারের পূর্ণিয়া লোকসভার নির্দল প্রার্থী পাপ্পু যাদব নিজের ভোটের খরচের জন্য অর্থ চেয়ে সাধারণ মানুষের জন্য একটি ইউপিআই নম্বর চালু করেছেন৷ মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রায় তিন লক্ষ টাকা জমা পডে়ছে ওই অ্যাকাউন্টে৷ দেশের লোকসভা ভোটে প্রার্থীরা এমনই নিত্যনতুন পন্থায় অবলম্বন করছেন৷ সেই পর্যায়েই ভোটারদের জন্য কিউ আর কোডের ব্যবস্থা করেছেন বারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক৷ পার্থর রাজনৈতিক জীবনের সূচনা বারাকপুর থেকেই৷ ছাত্র থেকে শুরু করে যুব রাজনীতি করেছেন এই শিল্পাঞ্চলেই৷ গত ২০১১ সালে বারাকপুর লোকসভার অধীন নৈহাটি বিধানসভা থেকে জিতে বিধায়ক হয়েছেন৷ ২০২২ সালের আগস্ট মাসে জায়গা পেয়েছেন রাজ্য মন্ত্রিসভায়৷ কিন্ত্ত এবার সেই পার্থকেই বারাকপুর থেকে লোকসভার প্রার্থী করেছে তৃণমূল৷ বিজেপি থেকে তৃণমূল এসে লোকসভা ভোটের টিকিট না পেয়ে আবারও বিজেপিতে গিয়ে বারাকপুর থেকে প্রার্থী হয়েছেন অর্জুন সিংহ৷ এমন যুদ্ধে নেমে তাই নতুন পদ্ধতিতে বারাকপুরের মানুষের থেকে নতুন করে মতামত নেওয়ার কথা ভেবেছেন তিনি৷ আপাতত ঠিক হয়েছে বারাকপুর লোকসভার সাতটি বিধানসভা বারাকপুর, নৈহাটি, ভাটপাড়া, নোয়াপাড়া, জগদ্দল এবং আমডাঙাতে একটি করে কিয়স্ক বসানো হবে৷ সেই কিয়স্কেই থাকবে কিউ আর কোডটি, সেখানে স্ক্যান করলেই বারাকপুরে বাসিন্দারা নিজ নিজ পরামর্শ দিতে পারবেন পার্থকে৷ এ ছাড়াও মুঠোফোনের যুগে নেতা-কর্মীরাও কিউ আর কোডটি ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেবেন৷ সেখানে পাওয়া মতামত তৃণমূল নেতৃত্ব প্রার্থীর কাছে পৌঁছে দেবেন৷ কিউ আর কোডের মাধ্যমে প্রচারের বিষয়টি চালু করার ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা নিয়েছেন নৈহাটি টাউন তৃণমূলের সভাপতি সনৎ দে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই সাধারণ মানুষ আমাদের প্রার্থীর কাছে কী চান, তা যেন তিনি জানতে পারেন৷ মানুষ যেমনটা চাইবেন আমাদের প্রার্থী সেইভাবেই প্রচার করবেন৷ এমনকি, জয়ী হয়ে যে সব পরামর্শ বারাকপুরের মানুষ দেবেন, তা কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগের ব্যবস্থা করবেন তৃণমূল প্রার্থী৷’’ অপরদিকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী পুরুলিয়ার তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে সভা করেন৷ নির্বাচনের সময়ে অশান্তি এদেশে নতুন কিছু নয়৷ বিশেষত বাংলায় রাজনৈতিক হিংসার নিয়ে হাজার অভিযোগ ওঠে ভোট পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে৷ তবে এবার রামনবমী, ইদের মতো উৎসব রয়েছে ভোটের ঠিক আগে৷ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশঙ্কা, এই সময়ে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি তৈরির চেষ্টা করবে বিজেপি৷ আর তাই দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, ওরা যা করে, করবে৷ আপনারা কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না৷ নিজেদের মতো থাকবেন৷ আর পরেরদিন আপনারা শান্তি মিছিল করবেন৷ বুঝিয়ে দেবেন, তৃণমূল বাংলায় শান্তি বজায় রাখে৷ উৎসবের নামে অশান্তি করে না৷” রবিবার পুরুলিয়ার হুড়ায় তৃণমূল প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোর সমর্থনে সভা করতে গিয়ে এই আশঙ্কার কথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সপ্তাহ দুয়েক পরই শুরু হয়ে যাবে চব্বিশের লোকসভা ভোট৷ তার প্রচারে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে জেলায় জেলায় জনসভা করছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ উত্তরবঙ্গে একদফা প্রচার সেরে তিনি রাঢ়বঙ্গে এসেছেন৷ রবিবার পুরুলিয়ার হুড়া থেকে প্রচার শুরু করলেন তিনি৷ উনিশের লোকসভা ভোটে পুরুলিয়ায় পদ্মঝড় উঠেছিল৷ জিতেছিলেন বিজেপির জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো৷ চব্বিশের নির্বাচনে সেই কেন্দ্রটি পুনরুদ্ধারে তৎপর তৃণমূল৷ এবার ঘাসফুলের প্রার্থী রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো৷ তাঁর সমর্থনে সভা করতে গিয়েই দলনেত্রী ভোটের সময়ে শান্তি বজায় রাখতে পরামর্শ দিলেন৷ এদিনের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী দলের প্রার্থী শান্তিরাম মাহাতোর হাত ধরে মঞ্চে তুলে বলেন, ‘‘তৃণমূলকে ভোট দিন৷ নয়তো আগামীদিনে ভারতবর্ষ থাকবে না৷ আর এখান থেকে বিজেপিকে জেতাবেন না৷ ওরা সব কেডে় নেবে৷ ধর্ম, জাত কেডে় নেবে৷ ইডি, সিবিআই লাগিয়ে দেবে৷’’ এনআইএ-র অভিযান নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আবার রামনবমী আসছে৷ চকোলেট বোম ফেললেও এনআইএকে ঢুকিয়ে দেবে৷ পুরুলিয়ায় সব হোটেলে গিয়ে এনআইএ খোঁজ নিচ্ছে, কে থাকছে, তোমার কী? তোমার কী কাজ? কোন হোটেলে কোন পার্টির লোক থাকবে? নির্বাচনের সময় আমরা সরকারি জায়গায় থাকি না৷ যে হেলিকপ্টার নিয়ে কর্মসূচিতে যাই, সেটাও দলের টাকায় ভাড়া করি৷ ’’