দত্তপুকুরে মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধারের ৩ দিন পরেও মৃত যুবকের পরিচয় জানা গেল না। দেহ উদ্ধারের পর কাটা মুন্ডু খোঁজার একাধিক চেষ্টা চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মুন্ডু উদ্ধার করা যায়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের বাঁ হাতে ট্যাটু করা আছে। একটি লাভ সাইন বা হৃদয়ের চিহ্ন এবং ইংরাজি অক্ষর ‘বি’ লেখা আছে। এই ট্যাটুর সূত্র ধরে তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ট্যাটুর ছবি তুলে জেলার থানাগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাতে এরকম ট্যাটু রয়েছে এমন কেউ নিখোঁজ আছেন কি না তা খোঁজ করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকদের অনুমান, কসাইয়ের ব্যবহার করা চপার দিয়ে এক কোপে ধড় থেকে মুন্ডু আলাদা করা হয়েছিল। দেহের পাশে মদের গ্লাস পাওয়া গেলেও মৃতের শরীরে অ্যালকোহল পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, সোমবার দত্তপুকুর থানার ছোটো জাগুলিয়ার মালিয়াকুর বাজিতপুর এলাকার ফাঁকা জমির পাশ থেকে একটি মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধার করা হয়। কৃষকরা প্রথম দেহটি দেখে পুলিশকে খবর দেন। দেহের পরীক্ষানিরীক্ষার পর জানা যায়, মৃত যুবকের বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। তাঁর গোটা শরীরে ক্ষতচিহ্ন ছিল। এমনকী যৌনাঙ্গও উপড়ে নেওয়া হয়েছিল। তাঁর হাত পা বাঁধা ছিল। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা মদের গ্লাস ও চিপসের প্যাকেট পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি বাজেয়াপ্ত করে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে মৃত যুবকের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এর জন্য তাঁর কাটা মুন্ডুর খোঁজ পাওয়া খুব জরুরি। এই কারণে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। মাঠ সংলগ্ন খালে ডুবুরি নামিয়ে দফায় দফায় মুন্ডু খোঁজার কাজ করা হয়েছে। বুধবারও ডুবুরি নামিয়ে খোঁজ চলেছে। কিন্তু সেটির হদিশ পাওয়া যায়নি।
দেহ উদ্ধারের পর ৩ দিন কেটে যাওয়ায় এবার যুবকের পরিচয় জানতে অন্য পথ অবলম্বন করতে চাইছে পুলিশ। তাঁর বাঁ হাতের ট্যাটুকে হাতিয়ার করে তদন্ত এগোচ্ছে। জেলার থানাগুলিতে তাঁর হাতের ছবি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বুধবার সকাল থেকে পুলিশ খোঁজ চালাচ্ছে, দত্তপুকুর ও সংলগ্ন এলাকায় কোথাও কোনও ভাড়াটে কিংবা অতিথি নিখোঁজ রয়েছেন কি না। এছাড়াও বামনগাছি ও বারাসাতের মাঝামাঝি রিজেন্ট গোডাউনে গিয়েও এ বিষয়ে খোঁজখবর করেছে পুলিশ। তবে তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে এখনও কিছু জানাতে চাইছেন না তাঁরা।
বুধবার ট্যাটুর ছবি দেখে এক মহিলা মৃত যুবকের দেহ শনাক্ত করতে এসেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। মহিলার দাবি, তাঁর স্বামীর হাতেও ওই একই ধরনের ট্যাটু করা আছে। তিনি কিছুদিন ধরেই নিখোঁজ রয়েছেন। তবে দেহ দেখার পর ওই মহিলা নিশ্চিত করেন, দেহটি তাঁর স্বামীর নয়।