রুফটপ রেস্তোরাঁ নিয়ে শহরে শুরু হয়েছে জোরদার অভিযান। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম গত সপ্তাহে সমস্ত রুফটপ রেস্তোরাঁ বন্ধের কথা ঘোষণা করার পরই পুলিশ শহরের ৮৩টি এমন রেস্তোরাঁর তালিকা তৈরি করে। একইভাবে, বিধাননগর পুলিশ এলাকা থেকেও আলাদা করে ২৫টি রেস্তোরাঁ চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই তালিকাভুক্ত সব রেস্তোরাঁতেই অন্তত একবার করে পরিদর্শন করেছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি জায়গায় গিয়ে তার অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়েছে, এবং সেই অনুযায়ী রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। যদিও আপাতত সেই পরিদর্শন ছাড়া অন্য কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। দমকল বিভাগও বেশিরভাগ পরিদর্শনে উপস্থিত ছিল।
Advertisement
পার্ক স্ট্রিটের সেলিকা হাউসের ছাদে থাকা ‘এলএমএনওকিউ’ নামের একটি রেস্তোরাঁর একটি অংশ পুরসভা ভেঙে দেয়। পরে মালিক পক্ষ হাইকোর্টে মামলা করলে আদালত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেই ভাঙচুর স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়। মামলাটি ওইদিন শুনানি না-হওয়ায় এখনও স্থগিতাদেশ জারি রয়েছে।
Advertisement
খাবার ও পানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অনেক রেস্তোরাঁয় নিয়ম অনুযায়ী ছাদের ৫০ শতাংশ খোলা রাখা হয়েছে, আবার অনেক জায়গায় তা মানা হয়নি। পুরসভা যেসব রেস্তোরাঁয় অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে, সেগুলোর জন্য আলাদা করে শুনানির ব্যবস্থা করা উচিত বলেই মনে করছেন তাঁরা।
এর আগেই পুরসভা নির্দেশিকা জারি করে বলে, যেসব রেস্তোরাঁ ও বার বেআইনি কাঠামো তৈরি করেছে, তারা যেন তাড়াতাড়ি নিজেরাই তা ভেঙে ফেলে। না হলে পুরসভা নিজেই আইন অনুযায়ী ভাঙচুর চালাবে।
এই পরিস্থিতিতে তিনটি জনপ্রিয় রুফটপ রেস্তোরাঁ হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে। আদালত জানিয়েছে, যদি কোথাও তৎক্ষণাৎ কোনও প্রাণহানির ঝুঁকি না থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁকে শুনানির সুযোগ দিতে হবে। প্রতিটি রেস্তোরাঁর কাগজপত্র নতুন করে খতিয়ে দেখে তবেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
পুরসভা একটি খসড়া নির্দেশিকা (এসওপি) তৈরি করেছে রুফটপ রেস্তোরাঁ পরিচালনার জন্য, যা অনুমোদনের জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া, যেসব রেস্তোরাঁ ব্যালকনিকে খোলা জায়গা হিসেবে ব্যবহার করছে, সেগুলিও পুরসভার নজরে রয়েছে। পুরসভার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, দেখা হচ্ছে তারা ওই ব্যালকনি বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছে কি না।
শনিবার সন্ধ্যায় শহরের বেশিরভাগ রুফটপ রেস্তোরাঁ বন্ধ ছিল। একসময় যেখানে শনিবার সন্ধ্যায় টেবিল পাওয়াই দুষ্কর ছিল, সেখানে এখন অনেকেই কেবল ইনডোরে খাওয়ার ব্যবস্থা রাখছেন। কেউ কেউ শুধুই খাবারের অর্ডার নিচ্ছেন, বসে খাওয়ার অনুমতি দিচ্ছেন না।
Advertisement



