কলকাতার বুকে থাকা বিস্তীর্ণ জলাভূমিগুলি আর অবহেলার অন্ধকারে ঢাকা থাকবে না। এবার সেইসব জায়গাই রূপ নেবে শহরের নতুন গর্বে। পুরনো ধাঁচ ভেঙে জলাভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে হাউস বোট, খেলার মাঠ, মনোরম প্রাকৃতিক অঞ্চল আর মাছচাষের আধুনিক কেন্দ্র।
কলকাতা পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, শহরের এই জলাভূমিগুলিকে যেমন সংরক্ষণ করা হবে, তেমনই তাদের কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হবে জীবন্ত পরিবেশ। ওয়েটল্যান্ড আইন অনুযায়ী যা যা করা সম্ভব, পুরসভা এবার ঠিক সেভাবেই এগোবে। শুধু প্রশাসনিক কাজ নয়, এই প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষকেও যুক্ত করার চিন্তা রয়েছে। যদি কোনও বাসিন্দার জলাভূমির মধ্যে নিজস্ব জমি থেকে থাকে, তবে সেই জমিকে পরিবেশ-বান্ধব ভাবে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা বুঝিয়ে দেবে পুরসভা।
জলকে প্রক্রিয়াজাত করে সেখানে শুরু হবে চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ চাষ। পাশাপাশি ওই জলাভূমির সৌন্দর্যায়ন করে কোথাও তৈরি হবে প্রাকটিস গ্রাউন্ড, কোথাও হাউস বোট। মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘এই জলাভূমিগুলি কলকাতার সম্পদ। আগে যতটা দখল হয়ে গিয়েছে, তা ফেরানো সম্ভব নয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকৃতিপ্রেমী। তাঁর ইচ্ছাতেই এই জলাভূমিকে রক্ষা করে জনহিতকর ও পরিবেশবান্ধব ব্যবহারের দিকে এগোচ্ছে প্রশাসন।’
এই প্রকল্পে অর্থের কোনও টানাটানি হবে না বলেও জানিয়েছেন মেয়র। রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় সবরকম সাহায্য করবে। উদ্দেশ্য একটাই—কলকাতা শহরের বুকেই এমন কিছু গড়ে তোলা, যা মানুষকে শুধু নতুনভাবে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ দেবে না, বরং শহরের ভিতরে থেকেই মানুষ প্রকৃতির ছোঁয়া পাবেন। মেয়রের কথায়, ‘এই জলাভূমিগুলিই একদিন কলকাতার অন্যতম দর্শনীয় স্থানে পরিণত হবে।’