উত্তর-পূর্বের ৭ রাজ্যে পাঁচদিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি, দুর্যোগের সম্ভাবনা পূর্ব ভারতেও

আইএমডি’র পূর্বাভাস আগামী পাঁচদিন তুমুল বৃষ্টিপাত হবে নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরায়। এছাড়াও অসম, মেঘালয় এবং অরুণাচলপ্রদেশেও চলবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি।

Written by SNS Guwahati | May 27, 2020 1:01 pm

প্রতীকী ছবি (Photo: IANS)

আগামী দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে উত্তর-পূর্বের চার রাজ্যে। আইএমডি’র পূর্বাভাস আগামী পাঁচদিন তুমুল বৃষ্টিপাত হবে নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরায়। এছাড়াও অসম, মেঘালয় এবং অরুণাচলপ্রদেশেও চলবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি।

মৌসম ভবন জানিয়েছে বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা শক্তিশালী দখিনা বাতাসের প্রভাবেই উত্তর-পূর্ব ভারতের নিম্ন অঞ্চলে আগামী পাঁচদিন দুর্যোগ চলবে। উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যগুলি ছাড়াও এদের সংলগ্ন পূর্ব ভারতেও আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। এছাড়াও ২৬ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত দক্ষিণের উপদ্বীপীয় অঞ্চলেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমডি।

ইতিমধ্যেই বৃষ্টি চলছে মেঘালয়ে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির পাশাপাশি বন্যা-ধস এবং হড়পা বানে বিপর্যস্ত অসমও। সোমবার রাত থেকেই এক নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে অসম এবং মেঘালয়ে। কিছু কিছু এলাকায় আবার রবিবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বিধ্বস্ত পরিস্থিতির মধ্যেই মৌসম ভবনের নতুন পূর্বাভাসে এটা স্পষ্ট যে আগামী দিনে দুর্যোগ আরও বাড়তে চলেছে।

ফলে আতঙ্কে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। এর মধ্যেই তুমুল বৃষ্টি আর হড়পা বানে অসংখ্য ঘর-বাড়ি ভেসে গিয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই দুই রাজ্যে। জলবন্দি রয়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। অসমে বন্যায় বিপর্যস্ত হয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার। পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে মেঘালয়ের গারো পাহাড়েও।

উত্তর ও মধ্য ভারতে তাপপ্রবাহের সতর্কতা, অন্যদিকে উত্তর-পূর্ব ভারতে বন্যা এবং হড়পা বান, তার সঙ্গে দোসর করোনাভাইরাস এবং উত্তর, পশ্চিম ও মধ্য ভারতে নতুন করে পঙ্গপালের উৎপাত— সব মিলিয়ে গোটা ভারতবর্ষের আবহাওয়ার এক ছন্নছাড়া রূপ দেখা গিয়েছে গত কয়েক দিনে।

এর মাঝেই আবার পূর্ব ভারতের দুই রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা তছনছ করে দিয়েছে সুপার সাইক্লোন আম্ফান। ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দুই জেলা উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা। সাতদিন হয়ে গেলেও কারেন্ট এবং জল নেই দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়। এই তালিকায় রয়েছে মেট্রোপলিটন শহর কলকাতারও একটা বড় অংশ।

গত দু’দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলা বিশেষ করে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সকাল থেকে বইছে হাওয়া। গতিবেগ খুব বেশি না হলেও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মানুষের মনে। তার মধ্যে আংশিক মেঘলা রয়েছে আকাশ। তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে গত কয়েকদিনে। অতিরিক্ত আদ্রতার কারণে ভ্যাপসা-গুমোট গরমও অনুভূত হচ্ছে মাঝে মাঝে।

আর এইসবের মধ্যে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলেও আগেই জানিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। দুর্যোগ জোরালো হলেও আম্ফান পরবর্তীতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে শুনেই আঁতকে উঠেছেন দক্ষিণবঙ্গবাসী। এর মধ্যেই আবার আইএমডি’ও পূর্বাভাস দিয়েছে যে উত্তর-পূর্ব ভারতের পাশাপাশি পূর্ব ভারতেও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে এখন আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়েছে ভারতের প্রায় সর্বত্রই।

প্রসঙ্গত, আজ কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩ ডিগ্রি কম। এবার শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়নি দক্ষিণবঙ্গে। আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বোচ্চ ৮৭ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৭২ শতাংশ।

এই সবের মধ্যেই আবার সোমবার সন্ধ্যায় পরপর দু’বার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর। প্রথম কম্পন অনুভূত হয় সন্ধ্যা ৮ টা ১২ মিনিট নাগাদ। রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৫.৫। দ্বিতীয় কম্পন অনুভূত হয় এর কিছুক্ষণ পরেই। মাত্রা ছিল ২.৬।

মণিপুরের পাশাপাশি কম্পন অনুভূত হয়েছে মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম এবং গুয়াহাটিসসহ অসমের বেশ কিছু এলাকায়। কয়েকদিন আগেই আরও একবার ভূমিকম্প হয়েছিল মণিপুরে। দিন পাঁচেক আগেই ওই কম্পনের মাত্রা ছিল ৩.৬।