• facebook
  • twitter
Monday, 12 May, 2025

২০১২ থেকে নিখোঁজ উসমান পাক জেলেই

১৯৯৫ সালে দিল্লিতে এসি মেরামতির কাজ শিখতে যাবেন বলে বাড়ি ছেড়েছিলেন তিনি

প্রতীকী চিত্র

২০১২ সালে আচমকা উধাও হয়ে গিয়েছিলেন মহম্মদ উসমান। উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের দীপা সরাইয়ের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। তার পর কোনও দিন তাঁর ফোন, চিঠি কিছুই পায়নি পরিবার। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের থেকে একটি চিঠি পেয়েছে সম্ভল পুলিশ। তাদের জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের লাহোরের জেলে রয়েছেন ৪৬ বছরের উসমান। কী ভাবে তিনি সেখানে পৌঁছলেন, এত বছর কী করলেন, সে প্রশ্নের জবাব স্পষ্ট নয়। উসমানের পরিবারের দাবি, তারা এই বিষয়ে কিছুই জানে না। গোয়েন্দারা মনে করছেন, গোটা বিষয়টি বড় ষড়যন্ত্রের অংশ। নেপথ্যে থাকতে পারে কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী।

সেই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে পাকিস্তান সরকারের দেওয়া একটি তথ্যে। পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, গত বছর গ্রেপ্তার হয়েছেন উসমান। প্রশ্ন উঠছে, ২০১২ সাল থেকে এত বছর তিনি কোথায় ছিলেন?

নিখোঁজ হওয়ার আগে বাড়িতে উসমান বলেছিলেন, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। তাঁর ভাই মহম্মদ ফরমান জানিয়েছেন, ১৯৯৫ সালে দিল্লিতে এসি মেরামতির কাজ শিখতে যাবেন বলে বাড়ি ছেড়েছিলেন তিনি। তার পর থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। ওই সময় সন্দেহভাজন আল-কায়দা জঙ্গি হিসাবে তাঁর নাম উঠে আসে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি তাঁর খোঁজ শুরু করে। ফরমান জানিয়েছেন, এর পরেই উধাও হয়ে যান উসমান। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে উসমানের সে দেশের জেলে থাকার খবর পাঠানো হয়। এ বার সম্ভল পুলিশকে দায়িত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাদের খুঁজে বার করতে হবে যে, এত দিন কোথায় ছিলেন উসমান। কী ভাবে গেলেন পাকিস্তানে।

পুলিশের একটি অংশ মনে করছে, কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তার যোগ থাকতে পারে। যদিও এর প্রমাণ নেই। উসমানের স্ত্রী রাজ়িয়া, পরিবারের সদস্যেরাও দাবি করেছেন, কী ভাবে তিনি পাকিস্তানে গিয়েছেন, তা তাঁরা জানেন না।

প্রসঙ্গত, পুলিশি তদন্তে দেখা গিয়েছে ওই দীপা সরাই থেকে এর আগেও বেশ কয়েক জন জঙ্গিদলে নাম লিখিয়েছেন। উসমানেরই প্রতিবেশী মৌলানা আসিম উমর ওরফে সানা-উল-হক আল-কায়দায় নাম লিখিয়েছিলেন। ভারতীয় উপমহাদেশের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে আমেরিকার সেনার হাতে নিহত হন। উমর এসি সারাইয়ের নাম করে প্রথম বার গায়েব হন। সেই সময় দীপা সরাই থেকে ১০ থেকে ১২ জন যুবক গায়েব। পরে পাকিস্তানে কয়েক জনের সন্ধান মিলেছিল।

সম্ভলের পুলিশ সুপার কৃষ্ণকুমার বিষ্ণোই জানিয়েছেন, পাকিস্তানে জেরায় উসমান সম্ভলের প্রাক্তন সাংসদ শিফক-উর-রহমান বর্কের কথা বলেছেন। দাবি করেছেন, তিনি তাঁর প্রতিবেশী ছিলেন। তাঁর নাতি জিয়া-উর-রহমান বর্ক এখন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ। হাজি নাজ়িব নামে এক জনের কথাও বলেছেন। তাঁর সন্ধান করছে পুলিশ। আর খোঁজার চেষ্টা করছে, কী ভাবে পাকিস্তানে গেলেন উসমান।