১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির দোহাই দিয়ে বাংলায় সাধারণ গরিব মানুষের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যেই ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেখানকার বিজেপি সরকারের এক মন্ত্রীর দুই পুত্রকে এই প্রকল্পে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত এপ্রিল মাসেই গুজরাতে এই দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে। বিষয়টি নিয়ে সরব হন বাংলার মন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি সাংবাদিক বৈঠক করে বাংলাকে অনৈতিকভাবে বঞ্চনার জন্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে দুর্নীতির অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়েছিল গুজরাতের পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী বচুভাই খাবড়ের দুই ছেলে বলবন্ত খাবাড় এবং কিরণ খাবাড়ের বিরুদ্ধে। এরপরই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। সেই মামলায় জামিন পেলেও কিছুক্ষণের মধ্যে ফের গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত কিরণ খাবাড়কে। আর ১০০ দিনের কাজ সংক্রান্ত অন্য একটি মামলায় রবিবারই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলবন্তকেও।
ডেপুটি পুলিশ সুপার জগদীশ সিং ভাণ্ডারী জানান, দাহোদ থানায় বলবন্তের বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ১০০ দিনের প্রকল্পের আওতায় বলবন্তের সংস্থা ৩৩.৮৯ লক্ষ টাকা পেয়েছিল সরকারের কাছ থেকে। কিন্তু ওই সংস্থাকে যে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছিল, সে কাজ তারা করেনি। সে কারণে প্রতারণা এবং বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে গত ১৬ মে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার ওই মামলায় তাঁরা জেল থেকে ছাড়া পান। তারপরেই আবার গ্রেপ্তার হলেন দু’জনেই। বলবন্তের মতো কিরণের সংস্থার বিরুদ্ধেও লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
প্রসঙ্গত, ১০০ দিনের কাজে প্রায় ৭১ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন গুজরাতের মন্ত্রী বাচু খাবাড়ের পুত্র বলবন্তসিং খাবাড়। গুজরাতে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এফআইআর দায়ের হয়েছিল গত ২৪ এপ্রিল। তাতে অভিযোগ করা হয়, ১০০ দিনের প্রকল্পে মন্ত্রী বাচু খাবাড়ের পুত্র বলবন্তের সংস্থা ১০০ দিনের প্রকল্পে সরঞ্জাম সরবরাহের কোনও বরাত পায়নি। তবুও জিনিসপত্র সরবরাহ করেছিল। এমনকি জিনিসপত্র পুরো সরবরাহের আগেই টাকাও মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রীপুত্রের সংস্থাকে। কুভা গ্রামের এক বাসিন্দা এই বিষয়টি প্রথমে জেলা প্রশাসনকে জানান। তারপরে পুলিশ সক্রিয় হয়েছিল।
এই ঘটনার উল্লেখ করে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সেই সময় সমাজমাধ্যমে লেখা হয়েছিল, ‘গুজরাতের পঞ্চায়েত মন্ত্রী বাচু খাবাড়ের পুত্র ১০০ দিনের কাজে ৭১ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। কেন্দ্র কি বাংলার মতোই এবার গুজরাতের বরাদ্দ কাটছাঁট করবে? কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল কি দুর্নীতির তদন্তে গুজরাটে যাবে, নাকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার রয়েছে বলে সব ধামাচাপা দেওয়া হবে?’
এছাড়াও সে সময় রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বিজেপিকে তোপ দেগে বলেছিলেন, ‘বিজেপি বলে, না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা। অথচ তারা গরিবদের প্রাপ্য কেড়ে নেয়। এসবের পরেও গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী সবাই চুপ করে আছেন।’ আর তৃণমূলের সাংসদ সায়নী ঘোষ মন্তব্য করেছিলেন, ‘ওরা বলে গুজরাত নাকি মডেল স্টেট। এদিকে গরিবের ৭১ কোটি টাকা লুট, মনে হয় এটাই ওদের মডেল।’