পাক সেনার বিশ্বস্ত চর ছিলেন তাহাউর রানা। জেরায় এমনটাই স্বীকার করেছেন তিনি। এমনকী, মুম্বই হামলার সঙ্গে তাঁর যে যোগ ছিল, তাও স্বীকার করে নিয়েছেন পাক বংশোদ্ভূত কানাডার ব্যবসায়ী রানা। তাহাউরের দাবি, লস্কর-ই-তৈবা কেবলমাত্র একটি জঙ্গি সংগঠন নয়, গোয়েন্দা এজেন্সি হিসেবেও কাজ করে তারা। তাঁর বন্ধু তথা সহযোগী ডেভিড হেডলি বহুবার লস্কর-ই-তৈবার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।
দিল্লির তিহার জেলে এনআইএ হেফাজতে থাকা রানা জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চকে জানিয়েছেন, ২৬/১১ হামলা পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর সহযোগিতায় পরিচালিত হয়েছিল। ২৬/১১ হামলার সময় তিনি মুম্বইয়ে ছিলেন। গোটা হামলাটা ছিল জঙ্গিদের পরিকল্পনার অংশ। খালিজ যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাঁকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছিল বলে দাবি করেছেন রানা।
Advertisement
মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখাকে তাহাউর আরও জানিয়েছেন, মুম্বইয়ে একটি অভিবাসন কেন্দ্র বা ইমিগ্রেশন সেন্টার খোলারও পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। মূলত সন্ত্রাসবাদের খরচ টানতেই এই ছক কষেছিলেন তাহাউর। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। এমনকী, শুধু মুম্বইয়ের তাজ হোটেলই নয়, ওই দিন আরও কয়েকটি জায়গায় হামলা চালানোরও পরিকল্পনা ছিল তাদের। জিজ্ঞাসাবাদের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তির পর মুম্বই পুলিশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাহাউর রানাকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
Advertisement
প্রসঙ্গত, মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী তাহাউর রানা। দীর্ঘদিন আমেরিকার জেলে বন্দি ছিলেন ৬৪ বছরের পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক রানা। কয়েক মাস আগে আমেরিকা থেকে তাঁকে ভারতে নিয়ে আসা হয়েছে। আপাতত তিনি তিহার জেলে আছেন। ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর ১০ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের একটি দল আরব সাগর হয়ে মুম্বইয়ে ঢোকে। একটি রেলস্টেশন, দুটি বিলাসবহুল হোটেলে হামলা চালায় সেই দলটি। প্রায় ৬০ ঘণ্টা ধরে চলা এই হামলায় ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়।
২০০৮ সালের সেই মুম্বই হামলার অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রকারী ডেভিড কোলম্যান হেডলি ওরফে দাউদ গিলানির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন রানা। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক ডেভিড কোলম্যানের সঙ্গে এক ব্যবসার সূত্রে আলাপ হয় রানার। জঙ্গিরা কোন পথে এই দেশে ঢুকে হামলা চালাবে, তাঁর রোডম্যাপ তৈরি করেছিলেন তাহাউর। পরে আমেরিকায় গ্রেপ্তার হন তিনি। চলতি বছরের এপ্রিলের শুরুতে ভারত হাতে পায় রানাকে।
Advertisement



