নারী সুরক্ষা, মহিলা বিল নিয়ে সংসদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সোচ্চার হয় তৃণমূল। নারী সুরক্ষা, মূল্যবৃদ্ধি-সহ একাধিক দাবিতে এবার বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন রাজ্যের শাসক দলের প্রতিনিধিরা। নির্ভয়া তহবিলের টাকা কেন খরচ হয়নি, মহিলা বিল পাস করানোর পরেও তা কার্যকর করতে এখনও কেন পদক্ষেপ করল না কেন্দ্র সরকার, তা জানতে চেয়ে সরব হয়েছে দল। সেই সঙ্গে সংসদের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নারী সুরক্ষার বিষয়ে কেন্দ্র উদাসীন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিন সংসদের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে। শুক্রবার সেই বৈঠকেই তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা প্রশ্নের ঝড় তোলেন। বৈঠকে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেছেন, ‘কেন নির্ভয়া তহবিলের বরাদ্দের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ খরচ করা হয়েছে? বাকি টাকা কোথায়? এই তহবিলের অর্থ মহিলাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত করতে বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও তার ব্যহার হচ্ছে না।’ নির্ভয়া তহবিলের ব্যয়বরাদ্দের পাশাপাশি এদিন মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে সোচ্চার হয় তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিল পাস হওয়া সত্ত্বেও তা কার্যকর করতে সরকারের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে সরকার কেন গুরুত্বের সঙ্গে পদক্ষেপ করছে না, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত এবারের বাজেটে সীমান্ত পরিকাঠামো খাতে প্রায় আশি শতাংশ ব্যয়বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। এই বৃদ্ধির কারণ এবং কোন খাতে কত বরাদ্দ করা হয়েছে, তা বিশদে জানতে চেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের তরফে এদিন আরও অভিযোগ করা হয়, জেল আধুনিকীকরণের জন্যেও বরাদ্দের মাত্র এক চতুর্থাংশ খরচ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ও লাক্ষাদ্বীপের জন্য ৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও মাত্র এক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এই বিষয়গুলি নিয়েও প্রশ্নও তোলা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, উন্নয়নমূলক পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গাফিলতি রয়েছে কেন্দ্র সরকারের। সেনসাস নিয়ে সরকারের তরফে কোনও আলোচনা শুরু হয়নি, কেন সরকার হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে, সে কথাও জানতে চেয়েছে তৃণমূল।
বৈঠকে কংগ্রেস সাংসদ অজয় মাকেনও উপস্থিত ছিলেন। তাঁর প্রশ্ন ছিল, মহিলা ও শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধের কত মামলা নথিবদ্ধ হয়েছে এবং মোট কত মামলা বকেয়া রয়েছে। তাঁর দাবি, মহিলাদের সুরক্ষায় সরকারে্র গাফিলতি রয়েছে এবং পুলিশও অপরাধী শনাক্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
এদিকে বিজেপি সাংসদ নবীন জিন্দালও এদিন বৈঠকে তাঁর দাবি জানান। তিনি দিল্লি-হরিয়ানার সিঙ্ঘু সীমানা কৃষক আন্দোলনের ফলে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকায় সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। সেখানে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার দাবি জানান তিনি।
সংসদের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এদিন সরব হয় বিরোধী দলগুলি। সরকার বরাদ্দের টাকা কীভাবে, কোন খাতে ব্যবহার করছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে তার বিশদ বিবরণের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল।