• facebook
  • twitter
Wednesday, 17 December, 2025

তাওয়াং-এ চিন সীমান্তে নতুন সেলা টানেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী 

ইটানগর, ৯ মার্চ – অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং-এ চিন সীমান্তে নতুন সেলা টানেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম টানেল। এই সুড়ঙ্গ তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, এর ফলে প্রবল তুষারপাতেও এই সুড়ঙ্গ দিয়ে যান চলাচল প্রভাবিত হবে না। শনিবার এক দিনের অরুণাচল সফরে গিয়ে চিন সীমান্তবর্তী সেলা গিরিপথের দ্বিতীয় সুড়ঙ্গটির উদ্বোধন করেন তিনি। ১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় নির্মিত

ইটানগর, ৯ মার্চ – অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং-এ চিন সীমান্তে নতুন সেলা টানেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম টানেল। এই সুড়ঙ্গ তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, এর ফলে প্রবল তুষারপাতেও এই সুড়ঙ্গ দিয়ে যান চলাচল প্রভাবিত হবে না। শনিবার এক দিনের অরুণাচল সফরে গিয়ে চিন সীমান্তবর্তী সেলা গিরিপথের দ্বিতীয় সুড়ঙ্গটির উদ্বোধন করেন তিনি। ১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় নির্মিত ওই সুড়ঙ্গের মাধ্যমে যে কোনও মরসুমে চিনের কাছে থাকা তাওয়াং-এর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে পৌঁছতে পারবে ভারতীয় সেনা।

শনিবার ইটানগরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সুড়ঙ্গের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, সেলা টানেলে যান চলাচল শুরু হলে তা ভারতীয় সেনাকে অনেকটাই এগিয়ে দেবে।  এই টানেল চিন সীমান্তে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াবে। ভারতীয় সেনা জওয়ানরা দ্রুত পৌঁছে পারবেন সীমান্তে। এই টানেল দিয়ে দ্রুত পৌঁছে যাওয়া যাবে চিন সীমান্ত সংলগ্ন তাওয়াং ও কামেং সেক্টরে। অস্ত্র নিয়ে যাওয়াও সহজ হবে। দুই লেন বিশিষ্ট সেলা টানেল প্রায় ১২ কিলোমিটার লম্বা।

Advertisement

বহুদিন ধরেই অরুণাচলকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে বেজিং, যা নিয়ে দুদেশের মধ্যে সংঘাত বেড়েছে। লাদাখ থেকে শুরু করে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চোখ রাঙাচ্ছে চিনা সেনা। ফলে আবারও গালওয়ানের মতো পরিস্থিতি হতে পারে। তেমনটা হলে দ্রুত এই টানেল দিয়ে পৌঁছে যাবেন জওয়ানরা।

Advertisement

শনিবার এই টানেলটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সমুদ্রপৃষ্ঠের ১৩,০০০ ফুটের উপরে সুড়ঙ্গটি তৈরি করা হয়েছে। এতদিন তাওয়াং ও কামেং সেক্টরে যাওয়ার যে পাহাড়ি পথ ছিল তা খুবই সংকীর্ণ ছিল। ট্যাঙ্ক ও সাজোয়াঁ যান চলাচল কার্যত অসম্ভব ছিল। ফলে দ্রুত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পৌঁছতে বেশ সমস্যায় পড়তে হত সেনাবাহিনীকে। বিশেষ করে বর্ষাকালে আরও বেহাল দশা হত ওই রাস্তার। কিন্তু এখন আর সেই সমস্যা রইল না। এই দুই লেনের টানেল দিয়ে সহজেই সাজোয়াঁ গাড়ি, অস্ত্রশস্ত্র খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাবে সেনা ছাউনিতে। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কোনও মরশুমেই সমস্যায় পড়তে হবে না ফৌজকে।

গালওয়ানকাণ্ডের পরে লাদাখ, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশের এলএসি-তে চিনা ফৌজের সক্রিয়তার কথা মাথায় রেখে জরুরি ভিত্তিতে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করেছে ভারত। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দ্রুত সেনা এবং সামরিক সর়ঞ্জাম চিন সীমান্তে পাঠানোর জন্য বিশেষ ভাবে সড়ক, সুড়ঙ্গ এবং রেলপথ নির্মাণে গুরুত্ব দিতে চাইছে নয়াদিল্লি। সেই কর্মসূচিরই অন্যতম অংশ সেলা গিরিপথের দু’টি সুড়ঙ্গ।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেলা টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন মোদি। প্রাথমিকভাবে খরচ ধার্য করা হয়েছিল ৬৯৭ কোটি টাকা। ভারত-চিন সীমান্তে পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য দ্রুতগতিতে টানেলের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু মাঝখানে দুবছর করোনার কারণে সেই কাজ ধাক্কা খায়। অবশেষে সেই টানেলের পথ খুলে গেল প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে।

১০০৩ মিটার দীর্ঘ প্রথম সুড়ঙ্গ এবং ১৫৯৫ মিটার দীর্ঘ দ্বিতীয় সুড়ঙ্গ নির্মাণে মোট খরচ হয়েছে ৮২৫ কোটি টাকা।  ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে দৈনিক ৩০০০ গাড়ি এবং ২০০০ পণ্যবাহী ট্রাক যাতায়াত করতে পারবে এই সুড়ঙ্গ দু’টিতে।

এদিকে, শনিবার সকালে অসমের কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্কে যান মোদি। সেখানে হাতির পিঠে সওয়ারি হন প্রধানমন্ত্রী। কাজিরাঙা থেকে তিনি যান অরুণাচল প্রদেশের ইটানগরে। তার পর উদ্বোধন করেন সেলা টানেলের। সেখান থেকে তিনি আসেন শিলিগুড়িতে। লোকসভা নির্বাচনের মুখে উত্তরবঙ্গের প্রথম সভাটি শিলিগুড়ি দিয়ে শুরু করেছেন তিনি।

Advertisement