বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল, তা যথেষ্ট বিধ্বংসী। কারণ লন্ডনগামী এই বিমানে দীর্ঘযাত্রার জন্য প্রচুর জ্বলানি তেল ভরা হয়েছিল। প্রায় ১.২৫ লক্ষ লিটার জ্বালানি ছিল এই এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমানটিতে। প্রায় ২৫ হাজার গ্যালন এভিয়েশন ফুয়েল থাকায় অগ্নিকাণ্ডের ফলে মুহূর্তেই সব শেষ হয়ে যায়। রক্ষা পায়নি যেখানে বিমানটি আঘাত করেছিল, সেখানে থাকা পশুপাখিও। প্রায় হাজার ডিগ্রি তাপমাত্রায় নিমেষে তা পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এই তীব্র আগুনে কেউ বাঁচতে পারে না। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে ২৫ থেকে ৩০টি দেহ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকারীরা, যার মধ্যে শিশুদেরও দেহ ছিল। রেসিডেন্সিয়াল কমপ্লেক্সের মধ্যে, ধ্বংসাবশেষের পাশে এখনও ছড়িয়ে রয়েছে পোড়া কুকুর ও পাখির মৃতদেহ। তীব্র তাপের ফলে পুড়ে ছাই গাছ-পালাও। এক উদ্ধারকারী বলছেন, ‘এই দুর্ঘটনা ভারতের অসামরিক বিমান পরিষেবার ইতিহাসে অন্ধকারতম দিন হয়ে থাকবে।’
গুজরাতের স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স-এর এক আধিকারিক জানান, তাঁরা খবর পেয়ে ২টা থেকে ২.৩০-এর মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। এর মধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দারা কয়েকজন আহতকে বের করে আনেন। কিন্তু এসডিআরএফ-এর পৌঁছনোর পর আর একটিও জীবিত মানুষ উদ্ধার করা যায়নি।
বৃহস্পতিবার দিনই বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঘটনার ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি জানান, উদ্ধারকারীরা চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি, কিন্তু এমন অগ্নিকাণ্ডে কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনাই ছিল না।
এক দমকল আধিকারিক বলেন, ‘বিমানের ট্যাঙ্ক ফেটেই বিস্ফোরণ। সঙ্গে সঙ্গে চারদিকে জ্বলে উঠল আগুন। এমন পরিস্থিতিতে শুধু মানুষ নয়, কুকুর, বিড়াল, পাখিরাও বাঁচার সময় পায়নি। সবই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।’
এক উদ্ধারকারী বলেন, ‘পিপিই পরে এসেছিলাম। কিন্তু এত গরম ছিল যে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। চারদিকে জ্বলন্ত ধ্বংসাবশেষ। তার মধ্যেই টুকরো টুকরো মৃতদেহ টেনে বার করেছি।’
এক অন্য কর্মী বলেন, ‘আমি ২০১৭ সাল থেকে বাহিনীতে আছি। অনেক দুর্ঘটনা দেখেছি। কিন্তু এমন আগুন, এমন মৃত্যুর ছবি আগে কখনও দেখিনি।’