তাবরেজ : খুনের দায় থেকে রেহাই হামলাকারীদের

মুসলিম তরুণ তাবরেজ আনসারিকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত এগারাে জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযােগ বাদ দিল ঝাড়খন্ড পুলিশ।

Written by SNS Seraikela | September 12, 2019 12:07 am

২২ বছর বয়সি তাবরেজ আনসারির গণপিটুনিতে মৃত্যুর প্রতিবাদ মিছিল। (File Photo: IANS)

মুসলিম তরুণ তাবরেজ আনসারিকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত এগারাে জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযােগ বাদ দিল ঝাড়খন্ড পুলিশ। জাতীয় টেলিভিশনে দেখা গিয়েছিল চুরির অভিযােগ তুলে একটা খুঁটির সঙ্গে তাবরেজ আনসারিকে বেঁধে রড দিয়ে একদল লােক পেটাচ্ছে এবং জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করছে।

গত ২৯ জুলাই এই মামলায় তেরাে জন অভিযুক্তের মধ্যে এগারাে জনের বিরুদ্ধে সেরাইকেলা খারসাওয়ান জেলা পুলিশ চার্জশিট দায়ের করেছে। কিন্তু চার্জশিটে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুসারে হত্যার কঠোরতম অভিযােগ বাদ দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযােগ দেওয়া হয়েছে।

সেরাইকেলা-খারসাওয়ানের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট বলেছেন, ২৪ বছর বয়স্ক তাবরেজ আনসারির পােস্টমর্টেম, মেডিকেল ও ফরেনসিক রিপাের্টের ভিত্তিতেই এই এগারােজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযােগ বাদ দেওয়া হয়েছে। পােস্টমর্টেম রিপাের্টে বলা হয়েছে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়েই তাবরেজ আনসারির মৃত্যু ঘটেছে। পােস্টমর্টেম ও মেডিকেল রিপাের্টে হত্যার অভিযােগ সমর্থিত হয়নি। আমাদের একটা সন্দেহ ছিল। তাই আমরা ফরেনসিক ও প্যাথােলজিক্যাল দিক থেকে একটা দ্বিতীয় অভিমত নিয়েছি, কিন্তু তারাও একই মতামত দিয়েছে। ফলে আমরা ৩০২ এর বদলে ৩০৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছি। দোষী সাব্যস্ত হলে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন, কারাদন্ড, এমনকি মৃত্যুদন্ডের সংস্থান আছে। কিন্তু ৩০৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হলে ন্যূনতম দশ বছরের কারাদন্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড পর্যন্ত হতে পারে।

তাবরেজ আনসারি পুনেতে কারখানার শ্রমিক হিসাবে কাজ করত। ঈদ উৎসবের জন্য সে বাড়ি ফিরেছিল। ১৭ জুন রাতে ধাতকিদি গ্রামে মােটরসাইকেল চুরির চেষ্টার সন্দেহে স্থানীয় লােকজন তাঁকে ঘিরে ফেলে। তাঁকে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে উন্মত্ত জনতা লাঠি ও লােহার রড দিয়ে মারতে থাকে। এরই একটা ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতে ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘জয় হনুমান’ বলতে বাধ্য করা হচ্ছে।

কোনও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সঙ্গে হামলাকারীদের সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া না গেলেও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ তাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানায়। টেলিভিশনে এই দৃশ্য দেখা সারা দেশ শিহরিত হয়ে ওঠে এবং অনেক শহরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংগঠিত হয়।