কেরলে সোনা পাচারে নাম জড়াল মুখ্যমন্ত্রীর সচিবের!

বড়সড় সোনা পাচার চক্রের হদিশ পাওয়া গেল কেরলে। ৩০ কেজি সোনা পাচারে সরকারি কর্মীর যুক্ত থাকার অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।

Written by SNS Thiruvananthapuram | July 8, 2020 3:45 pm

প্রতীকী ছবি (Photo: iStock)

বড়সড় সোনা পাচার চক্রের হদিশ পাওয়া গেল কেরলে। ৩০ কেজি সোনা পাচারে সরকারি কর্মীর যুক্ত থাকার অভিযোগে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এই ঘটনায় নাম জড়িয়ে গেল খোদ মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের দফতর।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কার্যত বাধ্য হয়েই নিজের প্রধান সচিবকে সরিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন। কিন্তু তাতেও বিতর্ক থামছে না। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর আসল দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। অবিলম্বে এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত প্রয়োজন, এমনটাই দাবি কংগ্রেসের।

বিতর্ক শুরু হয়েছে ৪ জুলাই থেকে। ওইদিন আরব আমিরশাহী থেকে বেআইনিভাবে ৩০ কেজি সোনা কেরলের তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দরে আসে। রাজ্যের আবগারি দফতর ওই সোনা বাজেয়াপ্ত করে। অভিযোগ ওঠে, আমিরশাহী থেকে কোটি কোটি টাকা মূল্যের ওই সোনা পাচারকারীরা নিয়ে এসেছে কেরলে কোনও কুটনৈতিক চ্যানেলকে কাজে লাগিয়ে।

এই ঘটনার সঙ্গে স্বপ্না সুরেশ নামে এক মহিলা এবং সরিৎ কুমার নামে এক ব্যক্তি যুক্ত। এরা আগে কেরলে অবস্থিত সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর কনস্যুলেটে কাজ করতেন। এই ঘটনায় সরিৎ কুমারকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে ১৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, বিতর্ক বেড়েছে অন্য অভিযুক্ত স্বপ্ন সুরেশকে নিয়ে। বিরোধীরা সরব হয়েছে একটি ইস্যুকে কেন্দ্র করে, তা হল মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের প্রধান সচিব এম শিবশঙ্করের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে স্বপ্নার। কেরল সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সঙ্গে বিভিন্ন কোম্পানির যোগাযোগের মাধ্যম ছিলেন স্বপ্না, যখন তিনি আরব আমিরশাহী কনস্যুলেটের কর্মী ছিলেন।

এম শিবশঙ্কর আবার মুখ্যমন্ত্রী প্রধান সচিব হওয়ার পাশাপাশি কেরল সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সচিবও ছিলেন। সেই সুত্রেই স্বপ্না এবং শিবশঙ্করের ঘনিষ্ঠতা। বিমানবন্দরে সোনা ভর্তি ব্যাগটি নিজের বলে দাবি করেন স্বপ্না। এখানেই কংগ্রেসের অভিযোগ, এই পাচারের ঘটনায় এম শিবশঙ্করও জড়িত স্বপ্নার পাশাপাশি। পুরো ঘটনাটি ঘটেছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের অগতিতেই।

কংগ্রেস নেতা তথা কেরল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন। মঙ্গলবার টুইটে তিনি বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর অফিস এবং তার সচিব যে চোরাচালানে যুক্ত তা জলের মতো পরিষ্কার। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবই পাচারে অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশকে পাইয়ে দিয়েছিলেন সরকারি চাকরি। পুলিশ স্বপ্নার সম্বন্ধে খারাপ রিপোর্ট দিয়েছিল। কিন্তু সরকার তা পাত্তা না দিয়ে স্বপ্নাকেই নিয়োগ করেছিল।

এখানেই স্পষ্ট এই পাচারের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সরাসরি যোগ আছে। কেরল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের রমেশ চেন্নিথালা এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি চিঠি লিখেছে। চাপে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন শিবশঙ্করকে প্রথমে নিজের প্রধান সচিবের পদ থেকে পরে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সচিবের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন।

শিবশঙ্করকে এই দুটি পদ থেকে সরিয়ে দিলেও এই পাচারের ঘটনায় নিজের সচিবের এবং তার দফতরের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।