• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

সাঁওলিয়া মন্দির উন্নয়ন প্রকল্পে ১৮ কোটি টাকার প্রস্তাব বাতিল করল রাজস্থানের আদালত

মন্দির চত্বরে ভক্তদের থাকার জায়গা, নিকটবর্তী ১৬টি গ্রামের সঙ্গে মন্দিরের সড়ক যোগাযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মন্দির বিস্তারের মতো নানা পরিকাঠামো উন্নয়নের বরাদ্দ ছিল।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

সাঁওলিয়া শেঠ মন্দিরের বিতর্কিত উন্নয়ন প্রস্তাবকে অবৈধ ঘোষণা করল রাজস্থানের মাণ্ডফিয়া দেওয়ানি আদালত। আদালতের রায়ের ফলে ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল মন্দির বোর্ডের তরফে মাতৃকুণ্ডিয়া তীর্থক্ষেত্রের জন্য অনুমোদিত ১৮ কোটি টাকার বরাদ্দ বাতিল হয়ে গেল। একই সঙ্গে আদালত স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, মন্দিরের তহবিল থেকে আর কোনও অর্থ এই প্রকল্পের জন্য খরচ করা যাবে না। ইতিমধ্যেই যদি কোনও টাকা খরচ হয়ে থাকে, তা দু’মাসের মধ্যে ফেরত দিতে হবে মন্দিরের তহবিলে।

মাণ্ডফিয়ার বাসিন্দা মদনলাল জৈন-সহ কয়েকজন আবেদনকারী ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে এই মামলা করেন। মোট ৪৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। তার মধ্যে ছিলেন মন্দির কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রধান কর্তা। আবেদনকারীদের অভিযোগ, ১৯৯২ সালের সাঁওলিয়া সেঠ মন্দির কমিটির আইনে স্পষ্টভাবে বলা হয়, মন্দিরের তহবিল কেবল ধর্মীয় কাজ ও মন্দির-সংক্রান্ত উন্নয়নের কাজেই ব্যয় করা যাবে। কিন্তু মন্দির পর্ষদ নাকি তহবিলকে ভিন প্রকল্পে ঢালার চেষ্টা করছিল, যা সম্পূর্ণ আইনের পরিপন্থী।

Advertisement

অভিযোগকারীরা জানান, তহবিল দিয়ে মন্দির চত্বরে ভক্তদের থাকার জায়গা, নিকটবর্তী ১৬টি গ্রামের সঙ্গে মন্দিরের সড়ক যোগাযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মন্দির বিস্তারের মতো নানা পরিকাঠামো উন্নয়নের বরাদ্দ ছিল। মন্দিরের মোট খরচের হিসেব ধরা হয়েছিল ২.৫ কোটি থেকে ৩০০ কোটি টাকা পর্যন্ত। কিন্তু সেই তহবিলকে এলাকার বাইরে সরকারি প্রকল্পে খরচ করার অজুহাত দেখানো হচ্ছিল, যা মন্দির আইনে অনুমোদিত নয়।

Advertisement

দেবস্থান দপ্তরও আগে থেকেই এই প্রকল্পে আপত্তি জানিয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, মন্দির দপ্তরের আওতার বাইরে কোনও সরকারি উদ্যোগে মন্দিরের অর্থ বরাদ্দ করা আইনবিরোধী। অভিযোগ, বোর্ড নজিরবিহীনভাবে তহবিল ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল।

সব পক্ষের শুনানির পর বিচারক বিকাশ কুমার আগরওয়াল ১৭ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন। তাঁর মন্তব্য, সাঁওলিয়া সেঠ মন্দির কমিটির আইন লঙ্ঘন করে বোর্ডের নেওয়া সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অবৈধ। তাই ১৮ কোটি টাকার প্রকল্প বাতিল করা হল। পাশাপাশি বোর্ডের সভাপতি ও প্রধান কর্তা ভবিষ্যতে কোনওভাবেই মন্দির তহবিলকে এ জাতীয় কাজে বরাদ্দ করতে পারবেন না।

এই রায়কে মন্দির অর্থব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা রক্ষার দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন দপ্তরের একাধিক কর্তাব্যক্তি। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মন্দির বোর্ড ভক্তসেবার পরিকাঠামো উন্নয়নে ৪২১ কোটি টাকার একটি রেকর্ড বাজেট অনুমোদন করেছে। কিন্তু আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা মাতৃকুণ্ডিয়া-সহ কিছু প্রকল্পের বাস্তবায়নে এখন বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

Advertisement