কর্নাটকে আট বিধায়কের ইস্তফা ফেরালেন অধ্যক্ষ

কর্নাটকে রাজনীতির উত্তাপে সরকারের ভাগ্য কোন দিকে যাবে তা এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। দক্ষিণের এই রাজ্যের দিকে তাকিয়ে গােটা দেশ।

Written by SNS Bengaluru | July 10, 2019 12:17 pm

কর্নাটকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চলছে কংগ্রেস পরিষদীয় বৈঠক। (Photo: IANS)

কর্নাটকে রাজনীতির উত্তাপে সরকারের ভাগ্য কোন দিকে যাবে তা এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। দক্ষিণের এই রাজ্যের দিকে তাকিয়ে গােটা দেশ। পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোনও লক্ষণ নেই। যে ১৩ জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন তাদের মধ্যে ৮ জনের ইস্তফা ফিরিয়ে দিয়েছেন অধ্যক্ষ রমেশ কুমার।

শনিবার কংগ্রেস এবং জেডি (এস) বিধায়ক মিলে ১৩ জন অধ্যক্ষ রমেশ কুমারের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দিতে বিধানসভায় যান কিন্তু সেই সময় অধ্যক্ষ না থাকায় সচিবের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দেন বিক্ষুব্ধ বিধায়করা। কিন্তু পুরাে বিষয়টি সংসদীয় আইন মেনে হয়নি।

অধ্যক্ষ রমেশ কুমার জানিয়েছেন, ‘বিধায়করা আইন মেনে ইস্তফাপত্র দেননি। আমার কাছে এসে তাদের আবার ইস্তফাপত্র দিতে হবে। ১৩টি ইস্তফাপত্রের মধ্যে ৮টি ইস্তফাপত্রে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে’।

মঙ্গলবার কংগ্রেসের পরিষদীয় বৈঠকে শীর্ষ নেতারা হাজির না হওয়া এবং সেই সঙ্গে আরও এক বিধায়কের পদত্যাগে জটিল হল পরিস্থিতি। কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদকে বেঙ্গালুরুতে পাঠিয়েছে সােনিয়া গান্ধি।

কর্নাটকের পরিস্থিতি নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। দুপুর ২টা পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় সভা। অধ্যক্ষ রমেশ কুমার আজ বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের ইস্তফাপত্র খতিয়ে দেখবেন বলে অধ্যক্ষের সচিবালয় জানিয়েছিল। সেহেতু সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনা ছিল রাজ্যজুড়ে।

দুপুরে অধ্যক্ষ রমেশ কুমার জানান, ‘কোনও বিক্ষুব্ধ বিধায়ক তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি। বিষয়টি তিনি ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়ে রাজ্যপালকে জানিয়েছেন। যে ১৩ জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন তাদের মধ্যে ৮ জন আইন মেনে ইস্তফা দেননি। তাঁদের সময় দেওয়া হয়েছে’।

সকালেই অধ্যক্ষ জানিয়েছিলেন, ‘বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের আলাদা আলাদাভাবে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে। কেউ যদি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান তা হলে আমার দফতরের অনুমতি নিয়েই আসতে হবে। কেউ যদি চাপের মুখে পড়ে ইস্তফা দিয়েছেন প্রমাণ করতে পারেন। তাহলে সেই ইস্তফা গ্রহণযােগ্য হবে না’।

সরকারের ডামাডােলের মধ্যে বেঙ্গালুরুতে বৈঠকে বসেছিল কংগ্রেস পরিষদীয় দল। কিন্তু দলের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না রামলিঙ্গ রেড্ডি, অঞ্জলি নিম্বলকর, এস রামাপ্পা, রােশন বেগের মতাে নেতারা। বৈঠক চলাকালীন ইস্তফা দেন বিধায়ক রােশন বেগ। তবে দলবিরােধী কাজের জন্য আগেই বেগকে বহিষ্কার করেছিল কংগ্রেস।

কংগ্রেস পরিষদীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘স্পিকারের কাছে আমরা আর্জি জানিয়েছি ওইসব বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজ করতে হবে। আগামী ৬ বছর যেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন সেই ব্যবস্থাও করতে হবে’।

কর্নাটকে কুমারস্বামী সরকারের গণইস্তফার পিছনে রাজনৈতিক বিরােধিতা বাদে অন্য কোনও কারণ আছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কংগ্রেসের বিধায়ক অঞ্জলি নিম্বালকরের সম্ভাব্য পদত্যাগ ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা।

সূত্রের খবর, এইচ ডি কুমারস্বামী মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে চলেছেন কংগ্রেস বিধায়ক অঞ্জলি নিম্বালকর। কর্নাটকের কয়েকশাে কোটি টাকার আইএমএ চিটফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন অঞ্জলির স্বামী আইপিএস অফিসার হেমন্ত নিম্বালকর, যিনি মামলায় প্রধান অভিযুক্ত মহম্মদ মনসুর খানকে বেকসুর রেহাই দিয়েছিলেন।

কিছুদিন আগে আইএমএ প্রতিষ্ঠাতা তথা চিটফান্ড কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মনসুর খান কংগ্রেস বিধায়ক রােশন বেগের বিরুদ্ধে ৪০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযােগ আনলে তার জেরে বেগকে সাসপেন্ড করে কর্নাটক সরকার।