‘রেপ ইন ইন্ডিয়া’ মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইব না : রাহুল গান্ধি

রাহুল গান্ধি ঝাড়খন্ডে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মােদির মেক ইন ইন্ডিয়ার স্বপ্ন পূরণ হােক বা না হােক, দেশ রেপ ইন ইন্ডিয়ার লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে চলেছে’

Written by SNS New Delhi | December 14, 2019 3:18 pm

রাহুল গান্ধি (File Photo: IANS)

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির সাম্প্রতিক ‘রেপ ইন ইন্ডিয়া’ মন্তব্য নিয়ে প্রত্যাশিতভাবে লােকসভায় শাসক দল সরব হয়। পাশাপাশি বিরােধীদের প্রতিবাদের জেরে একাধিকবার লােকসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। লােকসভায় অধিবেশনে স্মৃতি ইরানি বলেন, ‘স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার কোনও নেতা জোর গলায় বলেছেন, ভারতীয় মহিলাদের ধর্ষণ করা উচিত– রাহুল গান্ধি এহেন মন্তব্য করে দেশের মানুষকে কি বার্তা দিতে চেয়েছেন। ওকে শাস্তি দেওয়া উচিত’।

রাহুল গান্ধি ঝাড়খন্ডে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মােদির মেক ইন ইন্ডিয়ার স্বপ্ন পূরণ হােক বা না হােক, দেশ রেপ ইন ইন্ডিয়ার লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে চলেছে’– তাঁর এই মন্তব্যকে নিয়ে আজ লােকসভার অধিবেশনে শাসক দলের নেত্রী স্মৃতি ইরানি সহ শাসক দলের নেতানেত্রীরা কংগ্রেস নেতাকে একহাত নেন।

লােকসভায় শাসক দলের তােপের মুখে পড়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি জবাব দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও স্পিকার তাঁকে কথা বলার অনুমতি দেননি। সংসদের বাইরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি ক্ষমা চাইব না। আমি কি বলতে চেয়েছি সেটা ব্যাখ্যা করতে দেওয়া হােক। আমি বলেছিলাম, ‘প্রধানমন্ত্রী সবসময় মেক ইন ইন্ডিয়ার কথা বলে থাকেন– স্বভাবতই যে কেউ সংবাদপত্র খুলে মেক ইন ইন্ডিয়া সম্পর্কিত খবর দেখতে চাইবেন, এটা প্রত্যাশিত কিন্তু তারা সংবাদপত্র খুলে কি দেখেন? একটার পর একটা ধর্ষণের ঘটনা দেখতে পাই’।

কংগ্রেস টুইটারে পুরােনাে ভিডিও পােস্ট করে লেখে, ‘গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৩ সালে নরেন্দ্র মােদি এক জনসভায় বলছিলেন দিল্লি ধর্ষণের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে। রাহুল গান্ধিও আলাদা কিছু বলেননি। যদি ভারতীয় জনতা পার্টি তথা শাসক দল রেপ ইন ইন্ডিয়া মন্তব্য করার জন্য রাহুলকে যদি ক্ষমা চাইতে বলে, তাহলে প্রধানমন্ত্রী মােদিকে আগে ক্ষমা চাইতে হবে’।

রাহুল গান্ধি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মােদি ও শাসক দল বিজেপি’কে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে উত্তর-পূর্বের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ থেকে দেশবাসীর নজর সরানাের চেষ্টা করছেন’।

সংসদে রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে শাসক দলের সাংসদরা স্লোগান দেন। স্মৃতি ইরানি ক্রমাগত আক্রমণ চালিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘সব পুরুষরা ধর্ষক নন– রাহুল গান্ধি ওই ধরণের মন্তব্য করে ভারতীয় পুরুষদের অপমান করেছেন। তিনি কি বলতে চাইছেন দেশের সব পুরুষ ধর্ষক। রাহুল গান্ধি ৫০ বছরের দিকে যাচ্ছেন, কিন্তু তিনি বােঝেন না এধরণের মন্তব্য দেশে ধর্ষণের মতাে জঘন্য ঘটনাকে আমন্ত্রণ জানায়। রাহুল গান্ধির ক্ষমা চাওয়া উচিত। কংগ্রেস নেতার মন্তব্য নিন্দনীয়। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মতাে সংবেদনশীল ঘটনাকে নিয়ে তিনি রাজনীতি করছেন। দেশের মহিলারা তাঁকে উপযুক্ত জবাব দেবেন। কিন্তু আমি লােকসভায় উপস্থিত পুরুষদের জিজ্ঞাসা করছি দেশের প্রত্যেকটা পুরুষ কি ধর্ষক’।

তিনি বলেন, ‘আমি চাই সােনিয়া গান্ধি তাঁর পুত্রকে ব্যাখ্যা করে বলুন ভারতীয় মহিলারা কোনওদিন এহেন নিন্দনীয় কর্মকান্ডকে ক্ষমা করবেন না’। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ‘যারা এই ধরণের মন্তব্য করেন, তাদের লােকসভার সদস্য থাকার কোনও অধিকার নেই’।