• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

অ্যাঙ্গোলায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মুর ঐতিহাসিক সফর

উষ্ণ সংবর্ধনার মধ্যে খুলে গেল কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত

ছবি: এনএনআই

আফ্রিকা মহাদেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে অ্যাঙ্গোলায় পা রাখলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মু। রাষ্ট্রীয় সফরের প্রথম দিনেই লুয়ান্ডা বিমানবন্দরে তাঁকে দেওয়া হল অভূতপূর্ব সংবর্ধনা। সামরিক ব্যান্ডের সুর, গার্ড অফ অনারের প্রদর্শনী এবং ভবিষ্যতের আলোচনার এক প্রতীকি বার্তা— সব মিলিয়ে অ্যাঙ্গোলার প্রশাসন দেখিয়ে দিল, ভারতের রাষ্ট্রপতি একজন বিশেষ অতিথি হিসেবেই স্বাগত।

এদিন বিমানবন্দরে পৌঁছতেই মূর্মুকে স্বাগত জানান অ্যাঙ্গোলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তারা। অভ্যর্থনা শেষে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় রাষ্ট্রপতি ভবনে। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় আরও এক দৃষ্টিনন্দন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। দুই দেশের পতাকা শোভা পায় লাল কার্পেটের দুই প্রান্তে। অ্যাঙ্গোলার প্রশাসন স্পষ্ট করে জানায়, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে তারা ‘বিশেষ এবং দীর্ঘমেয়াদি’ বলেই দেখতে চায়।

Advertisement

রাষ্ট্রপতি মূর্মুর এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। কারণ, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারত–অ্যাঙ্গোলা সম্পর্ক অর্থনীতি, প্রযুক্তি, খনিজ, শক্তি এবং কৃষিখাতে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এই সফরের প্রধান লক্ষ্য, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, পরিকাঠামো উন্নয়ন, খনিজ অনুসন্ধান এবং ডিজিটাল ক্ষেত্রের সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

Advertisement

বৈঠকের প্রথম পর্বে আলোচনা হয় কৃষি ও খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে। অ্যাঙ্গোলার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষি অঞ্চলে ভারতীয় প্রযুক্তি ও বীজ ব্যবহারের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে তেল ও গ্যাসের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সহযোগিতা আরও বাড়াতে আগ্রহ দেখিয়েছে দুই দেশই। প্রসঙ্গত, অ্যাঙ্গোলা আফ্রিকার অন্যতম বৃহৎ তেল উৎপাদনকারী রাষ্ট্র। সেখানে ভারত বহু বছর ধরেই জ্বালানি বিনিয়োগ করে আসছে।

এ ছাড়াও হীরা ও রেয়ার আর্থ খনিজ পরিশোধনে যৌথ প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। অ্যাঙ্গোলার খনিজ শিল্পে ভারতের দক্ষতা প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হলে তা দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ডিজিটাল জনপরিকাঠামোর ক্ষেত্রে অ্যাঙ্গোলার আগ্রহ আরও বেশি। ভারতীয় প্রযুক্তি কীভাবে সেখানে নাগরিক সেবা উন্নত করতে পারে, সে দিকটিও আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।

সন্ধ্যায় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে একাধিক সমঝোতার ইঙ্গিত লক্ষ্য করা যায়। কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, এই সফরে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বিস্তৃত হবে, এবং আগামি দশকে আফ্রিকায় ভারতের কৌশলগত অবস্থান শক্তিশালী করতেই এই সফর বড় ভূমিকা নেবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের গ্লোবাল সাউথ–কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং আফ্রিকার সঙ্গে ঐতিহাসিক বন্ধন— দুই-ই এই সফরে নতুন গুরুত্ব পাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি মূর্মুর সফর শেষ হওয়ার আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, ভারত–অ্যাঙ্গোলা সম্পর্ক আগামী দিনে আরও শক্ত ভিতের উপর দাঁড়াতে চলেছে।

Advertisement