• facebook
  • twitter
Friday, 13 June, 2025

ফের সুর চড়ালেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, আদমপুর বায়ুসেনা ঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রী

'অপারেশন সিঁদুরে ভারতীয় সেনা যে সাহস, দৃঢ়তা ও শৌর্য দেখিয়েছে তা সমগ্র জাতির গর্বের বিষয়। আমি আমাদের সেনাবাহিনীকে প্রণাম জানাই।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

সোমবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণের প্রারম্ভেই ভারতীয় সেনাবাহিনীকে স্যালুট জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাতে ভারতীয় সেনার কৃতিত্বকে সম্মান জানানোর পর মঙ্গলবার সকালেই তিনি পৌঁছে যান পাঞ্জাবের আদমপুরের বাসুয়েনাঘাঁটিতে। জওয়ানদের কুশল সংবাদ নেওয়ার পর তাঁদের ফের বাহবা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হাতজোড় করে সকলের উদ্দেশে নমস্কার জানিয়ে স্লোগান তোলেন ‘ভারত মাতা কি জয়’। আদমপুরের ঘাঁটিতে যাওয়ার পর মোদী এক্স হ্যাণ্ডলে পোস্ট করে লেখেন, ‘আজ সকালে আমি এএফএস আদমপুরে গিয়েছিলাম এবং আমাদের সাহসী জওয়ানদের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁদের এই নির্ভীক কৃতিত্বের জন্য তাঁদের আমি কুর্নিশ জানাই। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ভারত চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকবে।’ তিনি লেখেন, ‘অপারেশন সিঁদুরে ভারতীয় সেনা যে সাহস, দৃঢ়তা ও শৌর্য দেখিয়েছে তা সমগ্র জাতির গর্বের বিষয়। আমি আমাদের সেনাবাহিনীকে প্রণাম জানাই। দেশ আপনাদের সঙ্গে আছে।

পহেলগামে জঙ্গি হানার পর ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক ক্ষেত্রে যে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছিল তা প্রশমনের পর মঙ্গলবার সকালে পাঞ্জাবের আদমপুরের বায়ুসেনাঘাঁটিতে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী। বেশ কিছুক্ষণ কথাও বলেন বায়ুসেনার জওয়ানদের সঙ্গে। তিনি এদিন বলেন, ‘ভারতীয় সেনার এই সাহসিকতা প্রত্যেক ভারতীয়র মাথা উঁচু করে দিয়েছে। আপনারা দেশের আত্মসম্মান বাড়িয়েছেন, দেশকে একসূত্রে বেঁধেছেন। আমাদের এয়ারফোর্স পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছে। আপনারা নিজেদের লক্ষ্যে সফল হয়েছেন। আপনারা সবাই আগামী প্রজন্মের অনুপ্রেরণা।’ মোদী আরও বলেছেন, ‘এই অপারেশন সিঁদুর কোনও সাধারণ অভিযান নয়, এই অভিযান ভারতের নির্ণায়ক শক্তির পরিচয়।’ আরও একবার তিনি মনে করিয়ে দেন, নয়া ভারতের সংজ্ঞা ও তিন সূত্রের কথা। সেগুলি হল, এক, সন্ত্রাসবাদী হামলার জবাব ভারত নিজের শর্তে দেবে। দুই, পরমাণু হুমকি সহ্য করবে না ভারত। তিন, সন্ত্রাসবাদী ও তার মদতদাতারা ভারতের চোখে একই।

পাঞ্জাবের এই বায়ুসেনা ঘাঁটিতেই ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এবং বায়ুসেনার তৎপরতায় সেই হামলা প্রতিহত করা হয়েছে। শুধু আদমপুর বায়ুসেনাঘাঁটিই নয়, আরও কয়েকটি বায়ুসেনাঘাঁটিতে হামলার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাতে সব ক’টি হামলাই ব্যর্থ হয়। পাকিস্তানের মাটিতে প্রত্যাঘাত এবং পাক হামলা দক্ষতার সঙ্গে রুখে দেওয়ায় তিন বাহিনীর প্রশংসা শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মুখে। তিনি বলেছেন, ‘জঙ্গিরা কাপুরুষের মতো লুকিয়ে থাকে। পাকিস্তানের ঘরে এই জঙ্গিরা লুকিয়ে ছিল। ভারতের অভিযানে ১০০-র বেশি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। পাকিস্তানের এমন কোনও ঠিকানা নেই, যেখানে জঙ্গিরা স্বস্তিতে থাকতে পারে। আপনারা ভারতের সীমা সুরক্ষিত করেছেন। ভারতের দিকে নজর দেওয়ার একটাই ফল, ধ্বংস। পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র ও দুঃসাহসের পরাজয় হয়েছে। এবার কোনও জঙ্গি হানা হলে ভারত তার জবাব দেবেই। সেনা, বিএসএফ জওয়ানদের স্যালুট।’

এদিন প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে এয়ারফোর্স স্টেশনে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। ঘাঁটির অভ্যন্তরে গিয়ে তিনি সেনা আধিকারিক ও সেনাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের মনোবল বাড়াতে উৎসাহ দেন। সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতির আবহে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর এবং সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়ানো শুধু আনুষ্ঠানিক নয়, দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দৃঢ় করার বার্তা দিয়েছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।