ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিল ভারত। ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ভারত সরকার কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। মঙ্গলবার বিদেশমন্ত্রকের তরফে নয়া এই আইন সম্পর্কে পাকিস্তানের মন্তব্যকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে পাকিস্তানের মন্তব্য আমরা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করছি। এই ধরনের মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তান নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের করুণ অবস্থার দিকে নজর দিক, অন্যদের উপদেশ দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই”।
সম্প্রতি পাকিস্তানের বিদেশ দপ্তরের একজন মুখপাত্র অভিযোগ করেছিলেন যে, সংশোধিত ওয়াকফ আইন আনার মাধ্যমে ভারতীয় মুসলিমদের মসজিদ এবং মাজার-সহ তাদের সম্পত্তি থেকে ‘উচ্ছেদ’ করার প্রচেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, এই আইন ভারতীয় মুসলিমদের ধর্মীয় এবং অর্থনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনকারী।’ পাকিস্তানের বিদেশ দপ্তরের ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমাদের আশঙ্কা, এই আইনের ফলে ভারতীয় মুসলিমদের আরও প্রান্তিক করে দেওয়া হবে।’ ওই মন্তব্যের পরেই প্রতিক্রিয়া জানায় দিল্লি।
Advertisement
এই মন্তব্যকে কড়া ভাষায় প্রত্যাখ্যান করে ভারত। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে প্রতিটি ধর্মের মানুষের সমান অধিকার রয়েছে। এই আইন শুধুমাত্র প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের কথা ভেবেই আনা হয়েছে। তবে বিরোধী দল এবং কিছু মুসলিম সংগঠন এই সংশোধনী নিয়ে আপত্তি তুলেছে। তাদের আশঙ্কা, এই আইনের মাধ্যমে অমুসলিমদের ওয়াকফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ থাকছে, যা ঐতিহাসিক ধর্মীয় সম্পত্তিগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
Advertisement
২০২৩ সালের আগস্টে এই বিলটি প্রথম সংসদে তোলা হয়। পরে বিরোধিতার মুখে এটি যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়। চলতি বছরের ২ এপ্রিল বাজেট অধিবেশনে এটি পুনরায় উত্থাপন করা হয়। ৩ এপ্রিল লোকসভায় ১২ ঘণ্টা বিতর্কের পর এটি পাস হয়। পরদিন রাজ্যসভাতেও বিলটি পাশ হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সম্মতি পাওয়ার পর এটি আইনে পরিণত হয়।
সরকারের দাবি, এই আইন কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয় বরং ওয়াকফ সম্পত্তির স্বচ্ছতা এবং কার্যকরী ব্যবস্থা নিশ্চিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য। সরকার বলেছে, এই সংশোধনী দেশের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে।
Advertisement



