ভারতের ৫টি যুদ্ধ বিমান গুলি করে নামিয়েছে পাকিস্তান সেনা, এমন দাবি করেছিলেন সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। পহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর বদলা নিতে মঙ্গলবার গভীর রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানের পরই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ দাবি করেন, ভারতের হামলার জবাব দিয়েছে পাকিস্তানও। জানান, ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে পাক সেনা। তার মধ্যে তিনটি রাফালে।যদিও পাকিস্তান এর স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। এবার আন্তর্জাতিক একটি সংবাদমাধ্যমে এই নিয়ে মুখ খুললেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এই নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে আসিফ বলেন, ‘আমি সমাজ মাধ্যমে দেখেছি। ভারতীয় সমাজ মাধ্যমেই যুদ্ধ বিমানগুলির ধ্বংসাবশেষের ছবি দেখা গিয়েছে।’ তাঁর এই মন্তব্যের পরই বিতর্ক আরও বেড়েছে। প্রশ্ন উঠছে, দেশের একজন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কীভাবে এই মন্তব্য করতে পারেন ? অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন যে প্রশাসনিক পদে থাকা একজন ব্যক্তি কোনও খবরের সত্যতা যাচাই না করেই কী করে মন্তব্য করলেন।শুধু আসিফ নন, পাক সরকারের তরফ থেকেও বুধবার একই দাবি করা হয়েছে। কিন্তু সে দেশের কোনও মন্ত্রীই এর স্বপক্ষে প্রমাণ দিতে পারেননি। পরে জানা যায় গোটা খবরটিই মিথ্যে।
ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান চালানোর পরই পাকিস্তানের তরফে ভুয়ো দাবি করা হয় যে পাক সেনা বাহওয়ালপুরে ভারতীয় বায়ুসেনার রাফাল জেট ও মিগ বিমান ধ্বংস করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় তথ্য যাচাই সংস্থা, পিআইবি-র তরফে ফ্যাক্ট চেক করে জানানো হয়েছে এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। সমাজ মাধ্যমে যে রাফাল বিমান ধ্বংসের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে, তা ২০২১ সালে পাঞ্জাবের মোগায় ভেঙে পড়া মিগ-২১ বিমানের ভিডিও।
পাকিস্তান ও পকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালিয়েছে ভারত। বেছে বেছে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলো উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালায় ভারত। মাত্র ২৫ মিনিটে ভারত এই হামলা চালানো হয় মোট নয়টি জায়গায়। তবে, ভারত নিজেদের আক্রমণে খুবই সংযম দেখিয়েছে। সাধারণ মানুষের বসবাসের কোনও জায়গায় তারা আক্রমণ করেনি।
স্যাটেলাইটে ধরা পড়েছে অপারেশন সিঁদুর-র প্রভাবে পাকিস্তানের বিভিন্ন দৃশ্য। সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ভিডিও। যেখানে বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকেতে গম্বুজের ছবি দেখা যাচ্ছে। আর সেই গম্বুজের ছিদ্রও স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে স্যাটেলাইট থেকে। ভারতীয় সেনার ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রে ধ্বংসাত্মক ছবি ধরা পড়েছে। সেই স্থান জৈশ-ই-মহম্মদের কাজের সঙ্গে যুক্ত। অপর ছবি মুরিদকেতে। স্যাটেলাইটের ছবিতে লস্কর-ই- তৈবার একটি ভবনের সম্পূর্ণ ধ্বংসাবশেষ দেখা যাচ্ছে। সরকারি সূত্রে খবর, নিষিদ্ধ সংগঠন জেইএম, এলইটি, হিজবুল মুজাহিদিনের সঙ্গে যুক্ত ১০০ জঙ্গি এদিন নিহত হন।
