প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে বিরোধীদের ক্ষোভ তুঙ্গে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সর্বদল বৈঠকে বলেছিলেন, আমাদের সীমান্ত পেরিয়ে ওখানে কেউ ঢুকে আসেনি। আমাদের এলাকায় কেউ ঢুকেও বসে নেই।

Written by SNS New Delhi | June 21, 2020 9:00 am

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (File Photo: IANS)

লাদাখ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যকে বিভ্রান্তিকর আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভের সুর চড়াল বিরোধীরা। শুক্রবার লাদাখ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, লাদাখে কেউ ভারতের এলাকায় ঢোকেনি। বিরোধীদের দাবি অনুপ্রবেশ না ঘটে থাকলে কুড়িজন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হল কিভাবে। বিরোধীদের পাল্টা জবার দিতে সরকারি পক্ষে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সর্বদল বৈঠকে বলেছিলেন, আমাদের সীমান্ত পেরিয়ে ওখানে কেউ ঢুকে আসেনি। আমাদের এলাকায় কেউ ঢুকেও বসে নেই। কংগ্রেসের রাহুল গান্ধি সহ অন্যান্য বিরোধী নেতারা প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন, দেশের সীমান্তে যা ঘটছে তার প্রকৃত তথ্য দিচ্ছেন না। সারা দেশ যখন ঘটনার প্রকৃত তথ্য জানতে উন্মুখ তখন প্রধানমন্ত্রীই ঘটনার অপব্যাখ্যা করছেন।

সরকারের পক্ষে সাফাই দেওয়া হয়েছে, ভারতীয় সেনা জওয়ানদের বীরত্বের কারণেই ভারতীয় ভূখণ্ডে কোনও চিনা সেনার অস্তিত্ব নেই। বিহার রেজিমেন্টের জওয়ানদের বলিদানের কারণেই চিনা অনুপ্রবেশের চেষ্টা রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে এবং ওইদিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় যে অপচেষ্টা করা হয়েছিল তা বানচাল করা সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টুইট করে জানিয়েছেন, রাজনীতি ছেড়ে রাহুল গান্ধির উচিত জাতীয় স্বার্থে সহমর্মিতা জানানো। নাম না করে রাহুল গান্ধিকে নিশানা করেছে বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডাও। ভার্চুয়াল সমাবেশ থেকে তিনি তোপ দেগেছেন, ‘উনি তো কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীকেই সম্মান করতেন না। প্রকাশ্যে অর্ডিন্যান্স ছিড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। গালওয়ানে দেশ যখন লড়াই করছে, উনি তখন টুইটারে নির্বুদ্ধিতা দেখাতে ব্যস্ত।’

লাদাখ নিয়ে বিরোধীদের প্রথম থেকেই অভিযোগ ছিল, চিনের সেনা ভারতের এলাকা দখল করে বসে থাকলেও মোদি সরকার তা অস্বীকার করছে। অন্ধকারে রেখেছে গোটা দেশকেই। সর্বদলীয় বৈঠকেও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধি বলেল, ‘৫ মে লাদাখে চিনা অনুপ্রবেশের পরই সরকারের সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা উচিত ছিল।’ চিন স্বৈরতান্ত্রিক দেশ হলেও ভারত যে গণতান্ত্রিক তা মনে করিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে ‘সবাইকে নিয়ে চলার’ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির প্রশ্ন ছিল, সাহসী যোদ্ধারা শহিদ কিভাবে হলেন? সর্বদল বৈঠকই বা কেন ডাকা হয়েছিল। শনিবার এই ইস্যুতে আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় কংগ্রেস। একের পর এক টুইটে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যকে হাতিয়ার করে সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেন রাহুল গান্ধি, পি চিদম্বরমরা। টুইটে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। তাঁর প্রশ্ন, অনুপ্রবেশ না হয়ে থাকলে, সামরিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা কেন?

অন্যদিকে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের তরফে গালওয়ান উপত্যকা ‘চিনা ভূখণ্ড’ বলে বিবৃতি দিয়েছে। যা নিয়ে দ্রুত কেন্দ্রের জবাবদিহি দারি করেছে শিবসেনা।