দেশের সমস্ত মন্দির-মসজিদ-গির্জার সমীক্ষায় স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, মন্দির বা মসজিদ নিয়ে নতুন করে কোনও মামলা করা যাবে না। আগে এই সংক্রান্ত মামলাগুলির নিষ্পত্তি হবে, তারপর নতুন মামলা আদালতে গৃহীত হবে। নিম্ন আদালতগুলিতে এই সংক্রান্ত যেসব মামলা চলছে সেইসব মামলায় এখনই তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশ দিতে নিষেধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার উপাসনাস্থল আইন মামলার শুনানি ছিল। শুনানি চলাকালীনই এই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল আইন বদলাতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা হয়েছিল। সাড়ে তিন বছর ধরে সেগুলির শুনানি হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে বৃহস্পতিবার ছিল এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি। বিচারপতিরা এদিন জানান, এই মুহূর্তে দেশে মন্দির, মসজিদ বা অন্য উপাসনাস্থল নিয়ে যত মামলা চলছে, যত সমীক্ষা চলছে, তা আপাতত স্থগিত থাকবে। নিম্ন আদালত, এমনকি হাইকোর্টগুলিকেও এই সংক্রান্ত মামলায় আপাতত তাৎপর্যপূর্ণ কোনও নির্দেশ দিতে নিষেধ করা হয়েছে। নিম্ন আদালতগুলি এই সংক্রান্ত নতুন কোনও মামলা শুনবে না। সুপ্রিম কোর্টে উপাসনাস্থল আইন মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ জারি থাকবে। পাশাপাশি উপাসনাস্থল আইনের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলিতে কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চাইল শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রের বক্তব্যকে রিপোর্ট আকারে আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন অনুযায়ী, কোনও মন্দির-মসজিদ বা গির্জার চরিত্র পাল্টানো যাবে না। ১৯৪৭-এ স্বাধীনতার সময় যেখানে যা ছিল, তেমনটাই রাখতে হবে। এই আইন বদলের দাবিতেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। মামলাকারীদের দাবি, এই আইনের জন্য ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টের আগে দখলীকৃত হিন্দু ধর্মস্থানের ধর্মীয় চরিত্র পুনরুদ্ধার করা যাচ্ছে না। ২০২১ সালের ১২ মার্চ উপাসনাস্থল আইনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র নিজেদের বক্তব্য জানানোর জন্য আদালতের কাছে সময় চায়। এই কারণে একাধিক বার এই মামলার শুনানি পিছিয়ে যায়। এখনও কেন্দ্র নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি।