আজ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন নীতীশ

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে টানা চারবার মােট সাতবারের জন্য শপথ নিতে চলেছেন জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার।এনডিএ-র বৈঠকে তাকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।

Written by SNS Patna | November 16, 2020 6:21 pm

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। (Photo: IANS)

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে টানা চারবার মােট সাতবারের জন্য আজ সােমবার শপথ নিতে চলেছেন জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার। রবিবার তার বাসভবনে এনডিএ-র বৈঠকে তাকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। এরপর রাজভবনে গিয়ে সরকারের গঠনের প্রস্তাব দিয়ে আসেন নীতীশ সহ এনডিএ নেতারা।

প্রসঙ্গত, ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভার নির্বাচন এ বার তিন দফায় সম্পন্ন হয়। ফল বেরােয় ১০ নভেম্বর। এনডিএ জোট পায় ১২৫ আসন। এরমধ্যে বিজেপির তুলনায় জেডিইউ প্রায় অর্ধেক আসন পায়। এরপরেই বিহারের মসনদে নীতীশ বসানাে নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়।

বিজেপির একাংশ চায়নি নীতীশ ফের মুখ্যমন্ত্রী হন। যা নিয়ে জোর জলঘােলা হয়। এরপরেই এই জল্পনা মেটাতে এ দিন পাটনায় নীতীশের বাসভবনে বৈঠক বসে এনডিএ র চার শরিক। সেখানে বিজেপি শীর্ষনেতাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই বৈঠকেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মত নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করে এনডিএ।

উল্লেখ্য, নীতীশ প্রথমবারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন ২০০০ সালের ৩ মার্চ। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে না পারায় এক সপ্তাহের মধ্যেই সরার পড়ে যায়। এরপর ২০০৫ – এর ২৪ নভেম্বর বিজেপির সমর্থনে দ্বিতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন ২০১০ সালে। ২০১৪- তে লােকসভা নির্বাচনে তাঁর দল জেডিইউ খুব খারাপ ফল করে। তারপরই মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদ থেকে ইস্তফা দেন নীতীশ। তাঁর জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী হন জিতন রাম মনি। ইস্তফা দেওয়ার ঠিক ১৫ মাসের মাথায়  ২০১৫- র ফেব্রুয়ারিতে চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ।

এরপরে আরজেডি- র সঙ্গে জোট বেঁধে বিপুল ভােটে জয়ী হয় নীতীশের দল। ওই বছরের ২০ নভেম্বর পঞ্চম বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদের শপথ নেন তিনি। উপমুখ্যমন্ত্রী হন লালুপুত্র তেজস্বী যাদব ২০১৭ -য় আরজেডি- র সঙ্গে জোট ভেঙে যায়। এরপর বিজেপির হাত ফের সরকার গড়েন নীতীশ। এবং ষষ্ঠবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হন।

এ বারের নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সপ্তম বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন তিনি। তার প্রস্তুতি হিসেবে এ দিনই রাজ্যপালের কাছে গিয়ে সরকার গঠনের দাবি জানান নীতীশ। আজ, সােমবার রাজভবনে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে।

নীতীশের ফের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়া নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরােধীরা। আরজেডির মনােজ ঝাঁ বলছেন, মাত্র ৪০ আসন নিয়ে সরকার চালানাে যায় না। বিহারের মানুষ দ্রুত নীতীশের বিকল্প খুঁজে নেবেন। আর সেটা হবে স্বতঃপ্রণােদিতভাবেই।

কংগ্রেসের তারিক আনােয়ার বলছেন, আগে নীতীশজি এনডিএ’র বড় নেতা ছিলেন, কিন্তু এখন ব্যাপারটা অন্য। বিজেপি ষড়যন্ত্র করে তাঁকে দুর্বল করেছে এবার তিনি মুখ্যমন্ত্রী হলেও রিমােট কন্ট্রোল থাকবে অন্য কারও হাতে।

অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীত্ব নিয়ে জল্পনার অবসান হলেও উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেল। এই পদের জন্য একাধিক নাম উঠে এসেছে জল্পনা। আরও বাড়িয়েছে প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মােদির টুইট।

বিজেপি সূত্রের খবর, এবার বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী পদে বসছেন না তিনি। সেই জল্পনা আরও দেয় সুশীল মােদির টুইট। এ দিনের বৈঠক শেষ হতেই সুশীল মােদির টুইটে লেখেন গত ৪০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে। বিজেপি ও সংঘ পরিবার অনেক কিছু দিয়েছে। তাই এবার তারা যে দায়িত্ব দেবে তা তাই পালন করব। তবে দলীয় কর্মীর পদ কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।

এই টুইট দেখে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, উপমুখ্যমন্ত্রী পদ না পেয়ে কিছুটা ক্ষুন্ন সুশীল মােদি। দলীয় সূত্রের খবর, তাকে বিহার কাবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানাে হতে পারে। যদিও পাল্টা মত রয়েছে। তাঁরা বলছেন, বিহারে বিজেপির সাফল্যর পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তাঁর। পুরস্কার স্বরূপ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হবে তাকে।