জাতীয় আবেগে ধাক্কা লেগেছে, লাদাখের ঘটনার প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে : প্রণব মুখোপাধ্যায়

লাদাখে চিন সীমান্তে কুড়ি জন ভারতীয় সেনা জওয়ান ও অফিসারের শহিদ হওয়ার ঘটনা জাতীয় ভাবাবেগে বড় ধাক্কা দিয়েছে বলে মন্তব্য করলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।

Written by SNS New Delhi | June 19, 2020 10:00 am

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। (File Photo: IANS)

লাদাখে চিন সীমান্তে কুড়ি জন ভারতীয় সেনা জওয়ান ও অফিসারের শহিদ হওয়ার ঘটনা জাতীয় ভাবাবেগে বড় ধাক্কা দিয়েছে বলে বুধবার রাতে মন্তব্য করলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। একই সঙ্গে সতর্কবার্তাও শুনিয়েছেন অশীতিপর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, একটা কথা আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই। লাদাখে ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় যে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা শুধু আমাদের জাতীয় কৌশলগত স্বার্থের জন্য উদ্বগজনক নয়, গোটা বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে।

কেন্দ্রে প্রথম ইউপিএ জমানায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত-চিন কৌশলগত সম্পর্কের যাত্রা শুরু হয়েছিল তাঁরই হাত ধরে। পরবর্তীকালে রাষ্ট্রপতি হিসাবে পদাধিকার বলে দেশের সুপ্রিম কমান্ডারও ছিলেন তিনি। তবে চিনের সঙ্গে এই উত্তেজনার পরিস্থিতি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানেরই প্রস্তাব দিয়েছেন প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।

প্রণব বলেছেন, বর্তমান উত্তেজনা সুকৌশলে প্রশমিত করতে হবে। সেই সঙ্গে সবরকম উপায় সন্ধান করে দেখতে হবে যে এর পুনরাবৃত্তি যেন না হয়। দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রশ্নে প্রণব বরাবরই আপসহীন। ইন্দিরা গান্ধির যোগ্য অনুগামী তিনি। কিন্তু একই সঙ্গে প্রণববাবু এও মনে করেন, চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শুধরোতে ১৯৮৮ সালে রাজীব গান্ধি যে পথে হেঁটেছিলেন সেটাই বিকল্প।

১৯৬২ সালে যুদ্ধের পর থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত ভারত-চিন সীমান্তে চোখে চোখ রেখে কথা হত। কিন্তু রাজীবের চিন সফরের পর থেকে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কে বদল আসে। সীমান্ত বিবাদ নিয়ে একদিকে যেমন আলোচনা চলতে থাকে, তেমনই দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ক্রমশ মজবুত হয়।

২০০৬ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসাবে চিন সফরে গিয়ে সেই নীতিতেই আস্থা রাখার কথা বলেছিলেন প্রণববাবু। চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছাড়াও সে বার তাঁর বৈঠক হয়েছিল তৎকালীন চিনা প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওয়ের সঙ্গে। কোনও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে সেই প্রথম তাঁদের নৌঘাটি ল্যানজাউতে নিয়ে গিয়েছিলেন চিনের শাসকরা।

প্রণবাবু এদিন তাঁর বিবৃতিতে আরও বলেছেন, জাতীয় ভাবাবেগে যে ধাক্কা লেগেছে তাকে সন্তুষ্ট করতে রাজনৈতিক শিবিরের দায়িত্ব কম নয়। সর্বসম্মত অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক শ্রেণিকেই করতে হবে। আর তা গড়ে তুলতে মুখ্য ভূমিকা নিতে হবে সরকারকেই। তাঁর কথায় সেই সার্বিক আলোচনায় দেশের সেনাবাহিনীকেও শরিক করতে হবে। আমাদের জাতীয় স্বার্থ যে সর্বোচ্চ- তা সুনিশ্চিত করতে হবে বর্তমান সরকারকে।