বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। শুধু বাংলা নয় আরও পাঁচ রাজ্যে রয়েছে ভোট। সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিহারের পর এবার বাংলা-সহ ১২ রাজ্যে শুরু হচ্ছে এসআইআর বা বিশেষ নিবিড় সংশোধন। সেই কারণে সোমবার রাত ১২টা থেকেই ‘ফ্রিজ’ হয়ে যাবে পুরনো ভোটার তালিকা। রাত ১২ টার পর থেকে আর কেউ পুরনো তালিকায় কোনও পরিবর্তন আনতে পারবেন না।
সোমবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জ্ঞানেশ কুমার জানান, মঙ্গলবার থেকেই সারা দেশে শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজ। এই সময়ের মধ্যেই নতুন ভোটারদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা, মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া এবং নাম, ঠিকানা, বয়স, লিঙ্গ ইত্যাদি তথ্যের সংশোধন করা যাবে।
Advertisement
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার বলেন, ‘নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই পুরনো তালিকা সোমবার রাত ১২টা থেকেই স্থগিত বা ফ্রিজ করা হচ্ছে। যাতে আগামী সংশোধন পর্যায়ে নতুন তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা যায়।‘
Advertisement
জ্ঞানেশ কুমার আরও বললেন, ‘বাংলা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই, সমস্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের উচিত নিজের দায়িত্ব পালন করা। ঠিক যেমন ভাবে নির্বাচন কমিশনার নিজের কাজ করছে, ঠিক সেই ভাবেই রাজ্য সরকারকেও নিজের দায়িত্ব পালন করতে হবে।‘
কমিশন জানিয়েছে, আগামিকাল থেকে শুরু হবে প্রশিক্ষণের কাজ, যা চলবে ৩রা নভেম্বর পর্যন্ত। এরপর ৪ঠা নভেম্বর থেকে ৪ঠা ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে বাড়ি-বাড়ি ‘এনুমেরাশেন ফর্ম’ দেওয়ার ও জমার কাজ। ১ মাস ধরে চলবে ভোটার তালিকায় নিবিড় সমীক্ষা। ৯ ডিসেম্বর সেই ফর্মের ভিত্তিতে প্রকাশিত হবে ‘খসড়া ভোটার তালিকা’। ওই দিন থেকে টানা ৮ই জানুয়ারি, ২০২৬ সাল পর্যন্ত গ্রহণ করা হবে অভিযোগ, আবেদন। এই পর্বেই শুরু হয়ে যাবে বাড়ি-বাড়ি ভেরিফিকেশনের কাজ।
যা চলবে ৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ৭ই ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত তালিকা। এই সময়ে ভোটাররা ফর্ম ৬, ৭, ৮ ও ৮এ পূরণ করে নাম অন্তর্ভুক্তি, বাদ দেওয়া বা সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন। শহরের ক্ষেত্রে আবেদন অনলাইনেও করা যাবে। বাকিদের ক্ষেত্রে স্থানীয় বুথ অফিসারের মাধ্যমে জমা দেওয়া যাবে।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, সংশোধন প্রক্রিয়া শুরুর আগে বর্তমান ভোটার তালিকাকে ‘ফ্রিজ’ করা হয়, যাতে কোনও পুরনো তথ্য পরিবর্তনের সুযোগ না থাকে। এরপর যাচাই-বাছাইয়ের পরই প্রকাশ করা হয় প্রাথমিক খসড়া ভোটার তালিকা। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, সংশোধন প্রক্রিয়া শেষে ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ তারিখে প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা।
জ্ঞানেশ কুমারের বার্তা, ‘যাঁদের বয়স ১ জানুয়ারি ২০২৬-এ ১৮ বা তার বেশি হবে, তাঁরা সবাই যেন ভোটার হিসেবে নাম নথিভুক্ত করেন। প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণই গণতন্ত্রের শক্তি।‘
এসআইআরের চূড়ান্ত তালিকা ধরেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন করতে চাইছে কমিশন। যেমন বিহারে হচ্ছে। বিহারের বিধানসভা ভোট আসন্ন। প্রতি বছরই ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ করে নির্বাচন কমিশন। নতুন নাম নথিভুক্ত করার পাশাপাশিই মৃত এবং অবৈধ ভোটারের নাম বাদ দিয়ে নতুন তালিকা প্রকাশ করা হয়।
২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের কোনও নথিই দিতে হবে না। ওই তালিকায় নাম দেখাতে পারলেই এ বারের এসআইআরে তাদের নাম উঠে যাবে। এসআইআরে ১১টি নথি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কমিশন। সুপ্রিম কোর্ট পরিচয়পত্র হিসাবে আধার কার্ড গ্রহণ করতে বলেছে।
Advertisement



