• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

গাজা নিয়ে মোদীর নীরবতা অনৈতিক ও অমানবিক: সোনিয়া গান্ধী

গাজায় মৃত্যুমিছিল নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবকেও 'বেদনাদায়ক এবং মানবতার উপর চরম আঘাত' বলে উল্লেখ করেছেন সোনিয়া।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

প্যালেস্টাইনের উপর অবিরাম আক্রমণ নিয়ে সোচ্চার হয়েছে বহু দেশ। সেখানে প্যালেস্টাইন সম্পর্কে নরেন্দ্র মোদী সরকারের লাগাতার নীরবতাকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। প্যালেস্টাইন ইস্যুতে ভারতের তরফে কড়া প্রতিক্রিয়া দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সোনিয়া। গাজায় মানুষের অসহায় মৃত্যুমিছিল, শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলা সত্ত্বেও মোদী সরকারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মোদী। এক্ষেত্রে ভারতের মানবিক রূপ এবং নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

এক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘প্যালেস্টাইন ইস্যুতে ভারতের পদক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সুসম্পর্কের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। সেখানে ভারতের সাংবিধানিক মূল্যবোধ বা রাজনৈতিক সুবিধে-অসুবিধে বিচার করা হচ্ছে না।’

Advertisement

আইডিএফ অর্থাৎ ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের লাগাতার হামলায় রক্তাক্ত গাজা। বর্তমানে সেখানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যদিও ইজরায়েল তা মানতে নারাজ। এই নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষ থেকে গাজার ভূখণ্ডে ইজরায়েলি হামলারও নিন্দা করা হয়। তারই মধ্যে শরণার্থী শিবির থেকে আসা তৃষ্ণার্ত শিশুদের উপর হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলি সেনা। তথ্য বলছে ইজরায়েলি সেনার হামলায় এখনও অবধি গাজায় প্রায় ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে শিশু এবং মহিলাদের সংখ্যা প্রায় ৭০ শতাংশ। সেইসঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তরফে পাঠানো ত্রাণও আটকে দিচ্ছে নেতানিয়াহু সরকার। গাজায় মৃত্যুমিছিল নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবকেও ‘বেদনাদায়ক এবং মানবতার উপর চরম আঘাত’ বলে উল্লেখ করেছেন সোনিয়া। বিশ্বের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক কখনওই ভারতের মনোভাবকে ব্যক্ত করতে পারে না বলে উল্লেখ করেছেন সোনিয়া গান্ধী। বিশেষ করে, যেখানে প্যালেস্টাইনকে ১৯৮৮ সালেই সর্বাগ্রে স্বীকৃতি দিয়েছিল, সেক্ষেত্রে মোদী সরকারের আমলে রাষ্ট্রসংঘে ভোটাভুটির সময় দ্বিরাষ্ট্র নীতির বৈঠকে ভারতের বিরত থাকা খুবই দুঃখজনক বলে মনে করেন কংগ্রেস নেত্রী। তাঁর কথায়, মানবতাবোধ ও নৈতিকতা বোধ, দু’টোর কোনওটিই যে নেই, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘গাজাবাসীকে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতিতে পড়তে বাধ্য করা হয়েছে, ইজরায়েলি সেনাবাহিনী অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য সাহায্য সরবরাহে বাধা দিচ্ছে। এটি নির্মমতার পরিচয়। সমগ্র বিশ্ব প্যালেস্টাইন ইস্যুতে পদক্ষেপ নিতে অনেক দেরি করে ফেলেছে। আর এই নিষ্ক্রিয়তাই ইজরায়েলের অত্যধিক দাপটকে বৈধতা দিয়েছে।’ অন্যদিকে, ফ্রান্স, ব্রিটেন, কানাডা, পর্তুগাল এবং অস্ট্রেলিয়া-সহ বেশ কয়েকটি দেশ সম্প্রতি প্যালেস্টাইনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে। এই পদক্ষেপকে সোনিয়া গান্ধী ‘মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের দীর্ঘস্থায়ী দাবি’ বলে অভিহিত করেছেন। মানবতার খাতিরে ভারতের আরও কঠোরভাবে ইজরায়েলের আক্রমণের নিন্দা করা উচিত বলে মনে করেন কংগ্রেস নেত্রী।

প্রসঙ্গত, গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে গত তিন বছরে চারবার ভোটদান থেকে বিরত ছিল ভারত। এরপরই প্যালেস্টাইনের প্রতি ভারতের অবস্থান নিয়ে বিরোধী শিবিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। সম্প্রতি বিশ্বের ১৪২ টি দেশের সঙ্গে প্যালেস্টাইন ও ইজরায়েল দ্বিরাষ্ট্র নীতির পক্ষে ভোট দিয়েছে ভারত।

Advertisement