অবশেষে ভারতে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবার ছাড়পত্র পেল মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের সংস্থা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর চলতি জুনেই বাণিজ্য করার লাইসেন্স পেয়েছে স্টারলিঙ্ক। তবে ভারতের বাজারে স্টারলিঙ্ক এখনও সক্রিয় না হলেও অন্যান্য একাধিক দেশে স্টারলিঙ্কের পরিষেবা চালু হয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে সারা বিশ্বের প্রায় ১০০টির বেশি দেশে স্টারলিঙ্কের পরিষেবা চালু রয়েছে। সূত্রের খবর, মাস্কের সংস্থার ইন্টারনেট ভারতের বাজারে প্রচলিত হতে আরও বছরখানেক সময় লাগতে পারে। প্রাথমিকভাবে এই ইন্টারনেটের গতি হতে পারে সেকেন্ডে ৬০০ থেকে ৭০০ গিগাবাইট (জিবি)।
জানা গিয়েছে, স্টারলিঙ্ক মূলত দুই ভাবে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা দিয়ে থাকে। এক, রোমিং পরিকল্পনা এবং দুই, আবাসিক পরিকল্পনা (রেসিডেন্সিয়াল প্ল্যান)। বাড়িতে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য আবাসিক পরিকল্পনাই উপযুক্ত। স্টারলিঙ্কের পরিষেবা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে দামি আমেরিকায়, আর সবচেয়ে সস্তা জামবিয়ায়।
ভারতে স্টারলিঙ্কের প্রাক্তন ডিরেক্টর সঞ্জয় ভার্গব ২০২২ সালে জানিয়েছিলেন, এই পরিষেবা এ দেশে চালু হলে প্রথম এক বছরে কানেকশন প্রতি ১.৫৮ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। তারপর ধীরে ধীরে খরচ কমে আসতে পারে ১.১৫ লক্ষ টাকায়।
এশিয়ার মধ্যে জাপান, মঙ্গোলিয়া, ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডন, ইয়েমেন, আজারবাইজানের মতো দেশে স্টারলিঙ্ক সক্রিয়। ভারতের প্রতিবেশীদের মধ্যে ভুটান এবং বাংলাদেশে এই ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যায়। দুই দেশেই স্টারলিঙ্কের আবাসিক পরিকল্পনার খরচ মাসে ৩০০০ থেকে ৪২০০ টাকা। এ ছাড়া মালয়েশিয়ায় ২৬০০-৪৬০০ টাকা, জাপানে ৪০০০ টাকা এবং ফিলিপিন্সে ৬০০০ টাকায় মাস্কের সংস্থার ইন্টারনেট পাওয়া যায়।
বলিভিয়া, ভেনেজুয়েলা ছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার প্রায় প্রতি দেশেই স্টারলিঙ্ক পরিষেবা চালু রয়েছে। মাসিক হিসাবে নিউ ইয়র্কে এর দাম ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা, কানাডায় এর দাম ৬৮০০ থেকে ৯০০০ টাকা। ইউরোপের দেশগুলিতেও স্টারলিঙ্ক রয়েছে, ব্যতিক্রম ইউক্রেন, বসনিয়া, সার্বিয়ার মতো কিছু দেশ। ব্রিটেনে স্টারলিঙ্কের ইন্টারনেটের খরচ ৮৭০০ টাকা, ইটালিতে ৩৪০০ থেকে ৫০০০ টাকা। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশেও এই সংস্থা ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করে থাকে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সাল থেকে ভারতে লাইসেন্সের জন্য অপেক্ষা করছিল স্টারলিঙ্ক। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের টেলিকম মন্ত্রক অবশেষে মাস্কের সংস্থাকে এ দেশে ব্যবসার জন্য অনুমতি দিয়েছে। এই নিয়ে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রদানকারী তৃতীয় সংস্থা ভারতে লাইসেন্স পেল। এর আগে এই ছাড়পত্র পেয়েছে কেবল ইউটেলস্যাট ওয়ানওয়েব এবং জিয়ো। অ্যামাজনের কুপিয়ের এখনও লাইসেন্সের জন্য অপেক্ষা করছে।