ছত্তিশগড়ের বস্তার জঙ্গলে ফের সাফল্য। কোনও গুলি ছোড়া বা রক্তপাত ছাড়াই আত্মসমর্পণ করলেন মোট ৩০ জন মাওবাদী। বুধবার উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা জানান, ‘হিংসার পথ ছেড়ে সাধারণ জীবনে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই মাওবাদীরা, যা সরকারের মাওবাদবিরোধী উদ্যোগের বড় প্রাপ্তি।’ আত্মসমর্পণকারীদের পুনর্বাসন ও নিরাপত্তার পূর্ণ দায়িত্ব নেবে রাজ্য সরকার, এমন আশ্বাসও দেন তিনি।
বিজয় শর্মা আরও বলেন, ‘সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্প, পুনর্বাসন নীতি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সাহসী ভূমিকা—এই তিনের সমন্বয়েই মাওবাদীরা এখন মূল স্রোতে ফিরতে চাইছেন।’ তিনি জঙ্গলে এখনও আত্মগোপন করে থাকা সদস্যদেরও একই পথে এগিয়ে আসার বার্তা দেন।
Advertisement
গত কয়েক মাস ধরেই বস্তার ও আশপাশের জেলাগুলিতে মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের হার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। জুলাই মাসেই একসঙ্গে ৬৬ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছিলেন, যাঁদের মধ্যে ৪৯ জনের মাথার উপর মোট ২ কোটি ২৭ লক্ষ টাকার পুরস্কার ঘোষণা ছিল। সম্প্রতি নারায়ণপুর জেলায় দুই মহিলা-সহ আরও আট মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন, যাঁদের মাথার দাম ছিল প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা।
Advertisement
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছেন, ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যেই দেশ থেকে মাওবাদ সম্পূর্ণ নির্মূল করা হবে। সেই লক্ষ্যেই ছত্তিশগড়, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড-সহ মাওবাদপ্রবণ রাজ্যগুলিতে বড় মাপের অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। ছত্তিশগড়-তেলেঙ্গানা সীমান্তবর্তী কারেগুট্টা পাহাড়ি অঞ্চলকে মাওবাদীদের শেষ শক্ত ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত করে সেখানে প্রায় তিন হাজার আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, লাগাতার অভিযানে দুর্বল হয়ে পড়লেও মাওবাদীরা এখন সাধারণ গ্রামবাসীদের টার্গেট করছে, যা প্রশাসনের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুনর্বাসনের নিশ্চয়তা ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম আরও জোরদার করা গেলে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাবে বস্তার ও আশপাশের অঞ্চল।
Advertisement



