লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হবে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার পর : প্রধানমন্ত্র

বহু রাজ্য প্রধানমন্ত্রীর লকডাউন ঘোষণার মেয়াদ বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছে। কারণ করোনা সংক্রমণ বাড়লে তা মোকাবিলার কোনও পরিকাঠামো অধিকাংশ রাজ্যেই নেই।

Written by SNS New Delhi | April 11, 2020 3:32 pm

দেশজুড়ে লকডাউন (Photo by Jewel SAMAD / AFP)

করোনা মোকাবিলায় তিন সপ্তাহের জাতীয় লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ এপ্রিল। ইতিমধ্যেই ওড়িশা লকডাউনের মেয়াদ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির অনুরোধ জানানো হয়েছে। ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনার পরই লকডাউন সম্পর্কে নতুন করে ঘোষণা করবেন বলে সূত্র মারফত জানানো হয়েছে।

পরবর্তী পর্যায়ে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে সূত্রের খবর। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পরিবহণ ব্যতীত আন্তঃরাজ্য চলাচল নিষিদ্ধ থাকছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় সবই বন্ধ থাকছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে লকডাউনের ফলে আর্থিক অবস্থার চরম অবনতি মোকাবিলায় সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং ব্যবস্থা চালু রেখে বিভিন্ন কারখানা কিভাবে চালু করা যায় তার চিন্তাভাবনা চলছে।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার বিপরীতমুখী হয়েছে বলে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার আর্থিক রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। অসামারিক বিমান চলাচল ব্যবস্থা সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিমান চলাচলে পাশাপাশি দুই যাত্রীর মধ্যের আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহণে অনুমতি দেওয়া হবে বলে সুত্র মারফত জানানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পক্ষে দেশের ৬০০ জেলার মধ্যে ৭৫’টি জেলায় করোনার সংক্রমণ চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এরফলে সমস্যা মোকাবিলায় সরকারের সুবিধা হবে বলে জানা গিয়েছে। বুধবার দেশের সকল বিরোধী নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করার সময় লকডাউন পুরোপুরি প্রত্যাহার করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন।

দেশে করোনার প্রকোপে সামাজিক জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সে যোগদানকারী নেতারা জানিয়েছেন, করোনা মোকাবিলায় নজরদারি বজায় রাখতেই হবে বলে প্রধানমন্ত্রী মত প্রকাশ করেছেন। দেশের মানুষের স্বার্থেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উপায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। করোনা মোকাবিলায় লকডাউন পরবর্তী সামাজিক, ব্যক্তিগত এবং আচরণগত ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে বলে প্রধানমন্ত্রী বারবার বিরোধী নেতাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন।

বিদেশমন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব বিকাশ স্বরূপ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর লকডাউন ঘোষণায় করোনা সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে সীমাবদ্ধ থেকেছে। যদিও লকডাউনের ফলে আর্থিক ক্ষতি চরম পর্যায়ে গিয়েছে এবং দরিদ্র মানুষ খুবই অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন। বিপুল সংখ্যক দিন মজুরদের কোন কাজ নেই। তারা বহু স্থানে আটকে পড়েছেন, এবং চরম কষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন।

বহু রাজ্য প্রধানমন্ত্রীর লকডাউন ঘোষণার মেয়াদ বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছে। কারণ করোনা সংক্রমণ বাড়লে তা মোকাবিলার কোনও পরিকাঠামো অধিকাংশ রাজ্যেই নেই। ইতিমধ্যেই কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, রাজস্থান, অসম, মধ্যপ্রদেশ এবং পাঞ্জাব ওড়িশার মতো লকডাউনের মেয়াদ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ঘোষণার পক্ষপাতি।

ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৬ হাজার মৃত্যু হয়েছে ১৯৯ জনের। এপর্যন্ত চিকিৎসায় আরোগ্যলাভ করেছেন ৫০৪ জন। গত চব্বিশ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের। বিশ্বে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ। এদের মধ্যে রোগ ধরা পড়েছে সাড়ে ১১ লাখের। সাড়ে তিন লাখ চিকিৎসার পর সুস্থ হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৯৭ হাজার জনের। ১৮৫’টি দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে।