করোনা সংকটে কর্মী ছাঁটাই অসংবেদনশীলতার পরিচয়: রতন টাটা

করোনা সংকটের সময়ে টাটা গোষ্ঠীর কোনও প্রতিষ্ঠানই কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটেনি। অথচ লকডাউনের প্রভাব টাটা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার উপরেও পড়েছে।

Written by SNS Mumbai | July 25, 2020 6:13 pm

টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধার রতন টাটা। (File Photo: AFP)

করোনা সংকটের সময়ে বেসরকারি সংস্থাগুলি যাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে না হাঁটে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু অনেকেই তা শোনেননি। দেদার কর্মী ছাঁটাই করেছে। কেউ বা সম্পন্ন হলেও ‘সুযোগ’কে কাজে লাগিয়ে কর্মীদের বেতন কমিয়ে দিয়েছে বা সরাসরি একাংশ কর্মী ছাঁটাই করে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে কোনও রাখঢাক না রেখেই সমালোচনা করলেন টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধার রতন টাটা। তিনি বোঝাতে চান, ভারতের বেশ কিছু কর্পোরেট সংস্থা যেভাবে কর্মী ছাঁটাই করেছে, তা খুবই হঠকারী পদক্ষেপ। এর থেকে বোঝা যায়, এ সব সংস্থার নেতৃত্বস্থানে যাঁরা রয়েছেন, তাদের মধ্যে কোনও সহানুভূতিই নেই।

একটি ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রতন টাটা বলেছেন, এই মানুষগুলিই আপনার জন্য কাজ করেছেন। তাদের গোটা কেরিয়ার আপনার সংস্থার জন্য দিয়েছেন। আর তাদের মাথা থেকেই কিনা ছাদ কেড়ে নিলেন। কর্মীদের প্রতি আচরণের এই আপনাদের নমুনা? নৈতিকতা বোধ?

এমনিতেই কর্মীদের প্রতি ব্যবহার ও স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপারে খেয়াল রাখার প্রশ্নে টাটা সংস্থার দীর্ঘদিনের সুনাম রয়েছে। করোনা সংকটের সময়ে টাটা গোষ্ঠীর কোনও প্রতিষ্ঠানই কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটেনি। অথচ লকডাউনের প্রভাব টাটা গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার উপরেও পড়েছে।

তাদের হোটেল ব্যবসা, এয়ারলাইন্স ব্যবসা, অর্থলগ্নি সংস্থা, অটোমোবাইল ব্যবসা সবই লকডাউনের ফলে জোর ধাক্কা খেয়েছে। কিন্তু তাঁরা কর্মী ছাঁটাই করেনি। কেবল শীর্ষ ম্যানেজমেন্ট পদে ২০ শতাংশ বেতন কমিয়েছে টাটা গোষ্ঠী।

এদিন ওই সাক্ষাৎকারে রতন টাটা আরও বলেন, কোনও প্রতিষ্ঠান যদি তার কর্মীদের প্রতি সংবেদনশীল না হয়, তা হলে সেই সংস্থাও টিকে থাকতে পারে না। তাঁর কথায়, আপনি যেই হোন না কেন, আর যাই করুন না কেন, মানছি যে করোনা সংকটে সকলেই আক্রান্ত।

কিন্তু তা সত্ত্বেও সকলে মিলে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য পথ বের করতে হবে। যেমন, ওয়ার্ক ফ্রম হোম বা বাড়ি থেকে কাজ করা একটা সমাধানের পথ, কিন্তু কর্মী ছাঁটাই সমাধানের পথ নয়। ভুলে গেলে চলবেনা, সব থেকে কঠিন সময়েই নতুন পথ বেরোয়।

টাটা গোষ্ঠীর এই বর্ষীয়ান কর্ণধার আরও বলেন, ‘সবাই তো মুনাফার পিছনে ছুটছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, কতটা নৈতিকতার সঙ্গে করছে। ব্যবসা মানেই শুধু টাকা কামানো নয়। ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িয়ে রয়েছেন, তাদের এবং গ্রাহকদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে নৈতিকতার পথেই চলতে হয়।’