রাতভর বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি উত্তর সিকিমে। ধসের কবলে একের পর এক এলাকা। বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে বইছে খরস্রোতা তিস্তা। ইতিমধ্যেই ফিদাং গ্রাম ভেসে গিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। আপাতত লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে, পর্যটকদেরও সতর্ক করেছে রাজ্য প্রশাসন। শুধুমাত্র সিকিম নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য এই আবহাওয়ার কারণে বিপর্যস্ত।
স্থানীয় সূত্রে খবর, উত্তর সিকিমের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ। টুং চেকপোস্টের কাছে ধস নেমেছে। অতি ভারী বৃষ্টিতে সিকিমের সাত মাইলের মধ্যে নামচি জেলার লেগশিপ ও কিউজিংয়ের মাঝেও ধস নামে। তিস্তা সংলগ্ন বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করার কথা ভেবেছে প্রশাসন। তাঁদের ওই অঞ্চল থেকে সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিস্তা সংলগ্ন বাসিন্দাদের জন্য হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। মঙ্গন, গিয়ালশিং, সোরেং জেলায় বন্যা ও ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছে সিকিম প্রশাসন। মঙ্গন জেলায় বন্যা ও ভূমিধসের লাল সতর্কতা জারি করা হয়।
গ্যাংটক জেলার মধ্যে অবস্থিত ডিকচু থেকে সিংতাম পর্যন্ত তিস্তা নদী সংলগ্ন এলাকাতেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পর্যটকদের উত্তর সিকিম ভ্রমণ পারমিট ইস্যু করা বন্ধ রয়েছে। শুধু সিকিমই নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্য যেমন মিজোরাম, অসম, ত্রিপুরা, মণিপুরে প্রবল বৃষ্টির জেরে ধসের কবলে পড়েছে বহু এলাকা। ধসের সঙ্গে বহু জায়গা বন্যার কবলে। সব মিলিয়ে কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পাহাড়-সমতলের একাধিক জায়গায় অতিভারী বৃষ্টিপাতের জেরে তিস্তা, জলঢাকা, তোর্সা, সংকোশ, রায়ডাক-সহ প্রতিটি নদীর জলস্তর বাড়ছে।
শুক্রবার রাতে অরুণাচল প্রদেশেরবানা-সেপ্পা রোডে প্রবল বৃষ্টিতে ভূমিধসের জেরে একটি গাড়ি খাদে পড়ে যায়। সেই ঘটনায় এক গর্ভবতী মহিলা-সহ সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিপাত হচ্ছে এই এলাকায়। বৃষ্টি চলাকালীন একটি গাড়িতে করে দুটি পরিবারের সদস্যরা যাচ্ছিলেন। হঠাৎ রাস্তায় ধস নামলে একটি খাদে পড়ে যায় গাড়িটি। ফলে গাড়িতে থাকা সকলেরই মৃত্যু হয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার উত্তর সিকিমের চুংথাং থেকে মুন্সিথাং যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাড়ি প্রায় ১০০০ ফুট নীচে তিস্তা নদীতে পড়ে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়িটিতে ১১ জন ছিলেন। এক জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। জখম অবস্থায় দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু বাকিদের খোঁজ মেলেনি। প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে উদ্ধারকাজও চালানো যাচ্ছে না। এরই মধ্যে আইএমডির পূর্বাভাসে অনেকেই কপালেই চিন্তার ভাঁজ। আইএমডি জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন এর থেকেও খারাপ আবহাওয়া দেখা যাবে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে।