কংগ্রেস-তৃণমূল জোট সফল করতে উদ্যোগী লালুপ্রসাদ-অখিলেশ কংগ্রেসের পাঁচ আসনের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার অনুরোধ মমতাকে

Written by SNS February 25, 2024 8:19 pm

কলকাতা, ২৫ ফেব্রুয়ারি –  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার তৃতীয় বারও  ক্ষমতায় আসবে,  প্রাথমিকভাবে এমন সম্ভাবনা যতই প্রবল হয়ে উঠছে, ততই  তাকে রুখতে মরিয়া লালুপ্রসাদ যাদব ও অখিলেশ যাদব।  তাই বাংলাতেও কংগ্রেস-তৃণমূল জোট সফল করতে মরিয়া তাঁরা।  কংগ্রেস-তৃণমূলের মধ্যে ফের জোট করাতে উদ্যোগ শুরু হয়েছে তাঁদের তরফে।  এই জোট গড়ার ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় নতুন উদ্যোগে নেমেছেন আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদব ও সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব।

 

বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র বৈঠকে আসন রফার সময়সীমা নিয়ে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মতবিরোধ বারবার প্রকট হয়েছে। গত বছর ডিসেম্বরে দিল্লিতে জোটের বৈঠকের পর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আসনরফা করার চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল তৃণমূল।  কিন্তু এআইসিসি নেতৃত্ব তাতে গুরুত্ব না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্য জনসভা থেকেই পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনে একক ভাবে লড়াই করার কথা ঘোষণা করেন। এর পরেও  হাল ছাড়তে নারাজ লালু ও অখিলেশ।  কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ার বিষয়ে ফোন করে মমতার সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা । কংগ্রেসের নতুন করে পাঁচ আসনের দাবির কথাও তাঁরা তৃণমূল নেত্রীকে জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

 
২০২৪-এর লোকসভা ভোটে জোট গঠনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি উতসুক আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ ও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ। বিহারে ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার ছেড়ে নীতীশ কুমারের এনডিএ জোটে ফিরে যাওয়ার পর থেকেই লালু বিরোধী জোট গঠনের বিষয়ে বেশ সাবধানী । বিহারে কংগ্রেস, আরজেডি ও বামপন্থী দলগুলির মধ্যে আসন সমঝোতা হওয়া দুরূহ ব্যাপার নয়। এদিকে উত্তরপ্রদেশে ১৭টি আসন কংগ্রেসকে ও একটি আসন তৃণমূলকে ছেড়ে ভোটযুদ্ধের মহড়া শুরু করে দিয়েছেন অখিলেশ। এবার উদ্যোগী হয়েছেন ইন্ডিয়া জোটে মমতাকে ধরে রাখতে। তাই মমতাকে তাঁরা কংগ্রেসের পাঁচ আসনের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন।  
 
গতবছর ডিসেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাহুল গান্ধি ও এআইসিসি সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। সেখানেই রাজ্য নেতারা ৮ থেকে ১১টি আসনে লড়াই করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতার কাছেও সেই মর্মে জোট বার্তা পাঠিয়েছিলেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু এ রাজ্যে কংগ্রেসের ২ টির বেশি আসন জেতার জায়গা নেই বলে প্রস্তাব ফেরত পাঠিয়ে একক লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে তৃণমূল। অন্য দিকে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস আবার তৃণমূলের তুলনায় বামেদের সঙ্গে জোটে আগ্রহী। বেশির ভাগ নেতাই সে কথা শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছেন। এমন অনিচ্ছুক নেতৃত্বের সঙ্গে জোট গড়তে আগ্রহী নন তৃণমূলের রাজ্য নেতারা।
 
তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের কথায়, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বহরমপুরে তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। এরপরও এআইসিসির কোনও নেতা অধীরের বিরোধিতা করে বিবৃতি দেননি।  তাঁদের বক্তব্য, ‘‘অধীর প্রকাশ্যেই বলছেন তিনি বামেদের সঙ্গেই জোট করতে বেশি আগ্রহী।  তৃণমূল কিন্তু ৪২টি আসন লড়াই করার পাশাপাশি সব আসনেই জয়ের জায়গা তৈরি করতে পারবে। তাই আমাদের জোটের প্রয়োজন নেই।’’ তাই জাতীয় নেতারা উদ্যোগী হলেও, কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।