• facebook
  • twitter
Thursday, 6 February, 2025

গরুচোর বলে সন্দেহ হলেই প্রকাশ্যে গুলির হুঁশিয়ারি কর্ণাটকের মন্ত্রীর

উত্তর কন্নড় জেলায় গরু চুরির ঘটনার মধ্যে মন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে সমালোচনা ও বিতর্কের ঝড় উঠেছে

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

গরু চুরির ঘটনা ঘটলে এবং কাউকে গরুচোর বলে সন্দেহ হলে তাদের রাস্তায় বা খোলা জায়গায় গুলি করে মারা হবে।  এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন কর্নাটকের মন্ত্রী মানকালা এস বৈদ্য। জেলায় এই ধরনের কার্যকলাপ চলতে দেবেন না বলে জোরের সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি কর্ণাটকের এই মন্ত্রী যাঁরা গরু পালন করছেন তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রশাসন প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে আশ্বস্ত করেছেন। উত্তর কন্নড় জেলায় গরু চুরির ঘটনার মধ্যে মন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্য ঘিরে সমালোচনা ও বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
 
সম্প্রতি কর্ণাটকে হোন্নাভারের কাছে একটি গর্ভবতী গরুকে জবাই করা নিয়ে তুমুল ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রীর এই বক্তব্য। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর ধরেই গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। আমি এস. পি -কে বলেছি যে এটি বন্ধ হওয়া উচিত এবং যে কোনও মূল্যে হওয়া উচিত। আমরা গরুর পূজা করি। আমরা স্নেহের সঙ্গে এই প্রাণীটিকে লালন-পালন করি। আমরা এর দুধ পান করে বড় হয়েছি।’ সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় তিনি বলেন, এর পেছনে যারা আছে, তারা যে-ই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে নির্দয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
 
কর্নাটকের মন্ত্রী মানকালা এস বৈদ্য বলেন, … আমরা যদি এই ধরনের কার্যকলাপকে সমর্থন করি, তাহলে কীভাবে এফআইআর এবং গ্রেপ্তার হয় ? আমরা চুপ করে বসে নেই, পুলিশ এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে, সরকার আছে। আমি এখানে আছি, সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সরকার, মুখ্যমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেউই এই বিষয়ে কাউকে সমর্থন করবেন না। যাঁরা গরু পালন করছেন, তাঁদের সুরক্ষার জন্য আমরা কাজ করব, ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।
কর্নাটকের মৎস্য, বন্দর এবং জলপরিবহণ মন্ত্রী মানকালা এস বৈদ্য।  উত্তরোত্তর চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনেই মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘কোনও রকম মাফ নয়, গরুচোর বলে সন্দেহ হলেই গুলি করার নির্দেশ দেব।’ মন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপি সরকারের জমানায় বার বার গরু চুরির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু কংগ্রেস জমানায় চোরেরা পার পাবে না বলেও সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি। যাঁরা গরু প্রতিপালন করছেন, তাঁদেরও আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘নির্ভয়ে গরু প্রতিপালন করুন। গরু এবং গরুর প্রতিপালকদের রক্ষার দায়িত্ব নেবে সরকার।’’
কর্ণাটকের মন্ত্রী নিজের মন্তব্যের পক্ষে যুক্তিও দেন। তাঁর যুক্তি, এই ধরনের নির্দেশ হয়তো ‘অমানবিক’ মনে হতে পারে। তবে যদি প্রয়োজন পড়ে, সন্দেহভাজন বা অভিযুক্তকে গুলি করা হবে। পুলিশকেও সেই নির্দেশ দেওয়া আছে বলে দাবি মন্ত্রীর। তিনি বলেন, ‘যেমন কর্ম, তেমনই ফল ভোগ করতে হবে। আমাদের জেলায় অর্থ উপার্জনের অনেক রাস্তা রয়েছে। তবে কেউ যদি এই পথে হাঁটে তবে কোনওভাবেই তা সমর্থন করা হবে না।’
এর পাশাপাশি কর্নাটকের প্রাক্তন বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেন মন্ত্রী।  তিনি এই ইস্যুতে বলেন, ‘কর্নাটকে এই ঘটনা নতুন নয়। বিজেপির সরকার থাকাকালীনও গরুচুরি হয়েছে এখানে। আর এখন সেই বিজেপি এই একই ইস্যুতে আমাদের আক্রমণ করছে।’ সরকারে থাকাকালীন বিজেপি এই ঘটনা রুখতে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ তোলেন মন্ত্রী।