• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

তালিবান বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা জয়শঙ্করের, কাছাকাছি এল ভারত-আফগানিস্তান

মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদনের মাধ্যমে ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। পাকিস্তানের তরফে এই চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

তালিবান শাসক দল

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহে কূটনৈতিক সমীকরণে বদল আনছে ভারত। কাবুলের প্রতি সখ্যতা বাড়াতে সচেষ্ট হয়েছে দিল্লি। বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের কার্যনির্বাহী বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তালিবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা পুনর্দখল করার পর এই প্রথম দুই দেশের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ে কথা হয়েছে।এই নয়া সমীকরণ সার্ক অঞ্চলের রাজনীতির ক্ষেত্রে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, আরও বেশি সংখ্যক নাগরিককে ভিসা প্রদান, ভারতীয় জেলে বন্দি আফগানদের মুক্তি, ইরানের চাবাহার বন্দরের উন্নয়ন- সহ একাধিক ইস্যুতে কাবুলকে সমস্ত ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে দিল্লি।

আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি ভারত। কিন্তু পহেলগামে জঙ্গি হামলার পরে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সমীকরণে বড় বদলের ইঙ্গিত মিলেছে। কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার নিন্দা করেছিল কাবুল। সেইসঙ্গে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছিল তারা। যার রেশ ধরে এবার আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে সরকারিভাবে কথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। পহেলগামের ঘটনার নিন্দা করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। 

Advertisement

এই প্রসঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বৃহস্পতিবার রাতে সমাজ মা্ধ্যমে লিখেছেন, ‘সন্ধ্যায় আফগানিস্তানের কার্যনির্বাহী বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে কথা হল। পহেলগামে জঙ্গি হামলার নিন্দা করার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।’ জয়শঙ্কর আরও লেখেন, ‘আফগানদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব অনেক পুরনো। উন্নয়নের কাজে তাদের সমস্ত  সহযোগিতায় আমরা প্রস্তুত।’

Advertisement

জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, যেভাবে তালিবানের ভারপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী পহেলগাম হত্যার নিন্দা করেছেন তাতে তিনি তাঁর প্রতি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। এরই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদনের মাধ্যমে ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। পাকিস্তানের তরফে এই চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই প্রচেষ্টাকে আমলা দেওয়া হয়নি আফগানিস্তানের তরফেও।

মুত্তাকি এবং জয়শঙ্করের মধ্যে আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানান তালিবানের যোগাযোগ বিভাগের ডিরেক্টর হাফিজ জিয়া আহমেদ। তিনি জানিয়েছেন, মুত্তাকি টেলিফোনে কথা বলার সময়ে জয়শঙ্করকে আফগান নাগরিকদের, বিশেষ করে যারা চিকিৎসা পরিষেবা নিতে চান তাঁদের জন্য আরও ভিসা প্রদানের অনুরোধ জানান। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ভারতীয় কারাগারে বন্দি আফগানদের মুক্তি ও প্রত্যাবর্তন এবং ইরানের চাবাহার বন্দরের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাফিজ জিয়া আহমেদ। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আগের তুলনায় শক্তিশালী হবে বলেও আশা তালিবান সরকারের।

উল্লেখ্য, ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার প্রভাব পড়েছে আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যেও। ফলে এখন আফগানিস্তানের কাছে ইরানের চাবাহার বন্দরের গুরুত্ব বাড়ছে। সবমিলিয়ে বিশ্লেষকদের অনুমান, জয়শঙ্করের ফোনের পর তালিবান সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।

দিনকয়েক আগেই কাবুলে গিয়েছিলেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের আফগানিস্তান, ইরান এবং পাকিস্তান দপ্তরের ডিরেক্টর আনন্দ প্রকাশ। তালিবান বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন তিনি।এরপর ফের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ ইঙ্গিত দেয় মজবুত হচ্ছে উভয় দেশের সম্পর্ক। 

Advertisement