২০২৫ সালে প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে ইতিমধ্যেই ৫৩ কোটি পুণ্যার্থীকে পুণ্য স্নান করতে দেখা গিয়েছে। এই সমাবেশ বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ভক্তের আগমন ঘটছে। ভারতীয় রেল এই তীর্থযাত্রীদের নির্বিঘ্ন পরিবহণ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে।
সমস্ত ভ্রমণকারীদের একটি মসৃণ তীর্থযাত্রা নিশ্চিত করতে মহাকুম্ভ এলাকায় গত ৩ বছর ধরে ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ সহ একটি বিশাল পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। এই ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে উন্নত রেল স্টেশন, ১৩ হাজারের বেশি ট্রেন চালানো ও ভিড় নিয়ন্ত্রণের উন্নত ব্যবস্থাপনা।
Advertisement
এখানে রেল পরিষেবাগুলির মধ্যে রয়েছে– প্রচুর রেল পরিষেবা, বাধাহীন ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন রুটের পৃথক ট্রেন পরিষেবা, যাত্রী চলাচলকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য সমস্ত পণ্যবাহী ট্রেনগুলিকে ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডোরে (ডিএফসি) ঘুরিয়ে দেওয়া, শান্টিং অপারেশন এড়াতে উভয় পাশে ট্রেন সেট বা ইঞ্জিন সহ ২০০ টি রেক মোতায়েন করা, আগামী ২৬ শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৩ হাজার ট্রেন পরিষেবা, যার মধ্যে ১২ হাজার ৫৮৩টি ট্রেন ইতিমধ্যে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলাচল করেছে।
Advertisement
১৩ জানুয়ারী থেকে প্রয়াগরাজের কুম্ভ অঞ্চলে ভারতীয় রেল ৩ কোটি ৯ হাজার তীর্থযাত্রীর যাতায়াতের সুবিধা করে দিয়েছে। শুধুমাত্র ১৭ ফেব্রুয়ারিতে ১৮ লক্ষ ৬০ হাজার এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৮ লক্ষ ৪৮ হাজার যাত্রী পরিবহনের ব্যবস্থা করেছে।
এখানে রেল স্টেশনগুলিতে যাত্রীদের বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভক্তদের ব্যাপক আগমনের জন্য ভারতীয় রেল নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ওপর গুরুত্ব দিয়েছে:
প্রয়াগরাজ অঞ্চলে উন্নত পরিকাঠামো গড়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে দ্বিতীয় এন্ট্রি সহ ৯টি রেল স্টেশন, মসৃণ যাত্রী চলাচলের জন্য ৪৮টি প্ল্যাটফর্ম ও ২১টি ফুট ওভার ব্রিজ গড়ে তোলা হয়েছে। ভারতীয় রেল যাত্রীদের পরিষেবায় কোনও ব্যাঘাত ঘটছে কিনা তার কড়া নজরদারির জন্য প্রয়াগরাজ মেলা অঞ্চলের ৯টি স্টেশনে ১১৮৬টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য ২৩টি স্থায়ী হোল্ডিং এলাকা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া প্রধান স্টেশনগুলিতে ১২টি ভাষায় ঘোষণার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাতে তীর্থযাত্রীদের অনুসন্ধান ও যোগাযোগের সুবিধা হয়। যাত্রীদের টিকিট কাটার কাজ সহজ করতে প্রয়াগরাজ, নৈনি, চেওকি এবং সুবেদারগঞ্জ এলাকায় বহু টিকিট কাউন্টার খোলা হয়েছে। ১৫১টি মোবাইল ইউটিএস টিকিট কেন্দ্র সহ ৫৫৪টি টিকিট কাউন্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই অঞ্চলে রেলের মূল পরিকাঠামো বাস্তবায়নের জন্য এপর্যন্ত ৩৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। নতুন গঙ্গা সেতু সহ বেনারস-প্রয়াগরাজ রেলের সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে। দ্বিগুণ করা হয়েছে ফাফামাউ-জাঙ্ঘাই রেলের সংখ্যা। সড়ক ও রেল চলাচল বাড়াতে ২১টি নতুন উড়ালপুল (আরওবি) এবং আন্ডারপাস (আরইউবি) চালু করা হয়েছে।
এছাড়া শক্তিশালী নিরাপত্তা ও ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিপুল সংখ্যক তীর্থযাত্রীর জন্য রেল কর্তৃপক্ষ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
১৩ হাজার রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (আরপিএফ) কর্মী, ১০ হাজার সরকারি রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) ও আধাসামরিক বাহিনী প্রধান স্থানগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছে। মসৃণ ট্রেন চলাচল নিশ্চিত করতে ৩ হাজারের বেশি রেল কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
Advertisement



