• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

তুলো আমদানিতে শুল্কছাড়ের মেয়াদ বৃদ্ধি কেন্দ্রের

দেশীয় বস্ত্রশিল্পকে চাঙ্গা রাখতে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা টিকিয়ে রাখতে তুলো আমদানিতে শুল্কছাড়ের মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়াল কেন্দ্র।

দেশীয় বস্ত্রশিল্পকে চাঙ্গা রাখতে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা টিকিয়ে রাখতে তুলো আমদানিতে শুল্কছাড়ের মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়াল কেন্দ্রীয় সরকার। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুল্কছাড়ের পূর্বঘোষিত সময়সীমা এবার ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক সরকারি বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রক। সরকারের দাবি, বস্ত্রশিল্পে ব্যবহৃত প্রধান কাঁচামাল হিসেবে তুলোর জোগান নিশ্চিত করা এবং উৎপাদন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যেই এই শুল্কছাড়ের সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি, রপ্তানিকারকদের সহায়তা করাও এর অন্যতম উদ্দেশ্য।

এই অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের কূটনৈতিক দিকও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, ভারত যে চারটি দেশ থেকে তুলো আমদানি করে – অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, ব্রাজিল ও মিশর, তার মধ্যে আমেরিকা অন্যতম। গত অর্থবর্ষে মার্কিন মুলুক থেকে ২৩ কোটি ডলারের তুলো আমদানি করেছে ভারত। যদিও পরিমাণের দিক থেকে অস্ট্রেলিয়া (২৫ কোটি ডলার) কিছুটা এগিয়ে। এই সিদ্ধান্ত এমন সময় নেওয়া হল, যখন ভারত-মার্কিন বাণিজ্যিক সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দিয়েছে। বুধবার থেকে ভারতীয় পণ্যের উপরে আমদানি শুল্কের হার এক ধাক্কায় ২৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, ভারত দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকান পণ্যে চড়া শুল্ক বসিয়ে আসছে।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতিতে তুলো আমদানিতে শুল্কছাড় বজায় রাখা কেবল দেশীয় বস্ত্রশিল্পের সহায়তা নয় বরং এটি আমেরিকার উদ্দেশে একপ্রকার বার্তাও বটে, বিশেষত যখন আমেরিকা বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মতো দেশ থেকে তুলনায় কম শুল্কে তৈরি পোশাক আমদানি করছে। এর ফলে ভারতের পোশাক রপ্তানি বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আগামী দিনে এই সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হয় এবং আমেরিকার প্রতিক্রিয়া কী হয়, তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত বস্ত্রশিল্পের শ্বাস নেওয়ার জায়গা করে দিল নয়াদিল্লি। সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, শুল্কছাড়ের মেয়াদ বৃদ্ধির লক্ষ্য হল কাঁচা তুলোর দাম স্থিতিশীল করা, ভারতে তৈরি টেক্সটাইল পণ্যের উপর মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমানো এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলিকে রক্ষা করা।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫ আগস্ট ঘোষণা করেছিলেন, কৃষক ও ব্যবসায়ীদের গায়ে শুল্ক সংক্রান্ত কোনও আঁচ সরকার লাগতে দেবে না। ঢাল হয়ে দাঁড়াবে কেন্দ্র। শিল্পমহলের একাংশের ধারণা, ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নতির পথ কিছুটা মসৃণ করতে চায় মোদী সরকার। আমদানিতে শুল্কছাড়ের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ওয়াশিংটনকে ভারতের বার্তা, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যের পথে সংঘাত চাইছে না ভারত।

Advertisement