চিন-পাকিস্তান থেকে মধ্যপ্রদেশে সাইবার জালিয়াতি চক্রের রসি চিন-পাকিস্তানের পান্ডাদের হাতে

Written by SNS April 27, 2024 4:22 pm

ভোপাল, ২৭ এপ্রিল– এতদিন সাইবার জালিয়াতার কেন্দ্রবিন্দুতে জামতাড়া, ভরতপুর থাকলেও এবার এদেরকে অনেক পেছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর ও উজ্জয়িনী৷ গোটা দেশের কাছে সাইবার জালিয়াতির নতুন ‘হাব’ এই দুই শহর৷ পুলিশ জানাচ্ছে এই দুই জায়গার কয়েকটি গ্রাম থেকেই সারা দেশের বাসিন্দাদের কাছে যাচ্ছে ফোন৷ সাইবার জালিয়াতি করে তারা তুলে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা৷ তবে এরথেকেও বেশি চমকে দেওয়ার মতো তথ্য হল এই দুই শহরের জালিয়াতি চক্রের গোটাটার কর্ণধার বসে রয়েছে চিন কিম্বা পাকিস্তানে৷
সম্প্রতি এই চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে লালবাজারের গোয়েন্দাদের কাছে৷ মধ্যপ্রদেশের গ্রামগুলোতে বসে প্রতারণা করা হলেও এই চক্রের মাথারা চিন ও পাকিস্তানে রয়েছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে খবর৷ জানা গিয়েছে, এবার ওই গ্রামগুলো শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা৷ বড় কোনও সাইবার অপরাধ ঘটানোর আগেই যাতে তাদের নির্মূল করা যায়, সেই চেষ্টাই করছেন তাঁরা৷ লালবাজার সূত্রে খবর, বর্তমানে জালিয়াতার ধরণ পাল্টে মানুষকে জালে ফেলতে চক্র৷ মানুষকে টাকার লোভ দেখিয়েই লুঠ হচ্ছে সর্বস্ব৷ ‘অল্প টাকা লগ্নি করলেই ফেরত পাওয়া যাবে মোটা টাকা৷’ নামী লগ্নিকারী সংস্থার নাম করেই ফোন করছে সাইবার জালিয়াতরা৷ সেই সংস্থার নাম শুনেই সেই ‘কলার’কে বিশ্বাস করে ফেলছেন সকলে৷ আর জালিয়াতরা এই সুযোগই নিচ্ছে৷ এমনই একটি জালিয়াতির ঘটনা সামনে এসেছে৷ যেখানে মূলত হিন্দি ও ভাঙা ইংরেজিতেই জালিয়াতরা ফোন করেছিল৷ এক ব্যক্তিকে বলা হয়েছিল একটি লটারিতে তাঁর মোবাইল নম্বর বিশেষ স্কিমের আওতায় এসেছে৷ ওই স্কিমেই তিনি টাকা লগ্নি করলে প্রায় তিনগুন পর্যন্ত টাকা ফেরৎ পাবেন৷ প্রায় তিনগুণ টাকা ফেরৎ পাওয়ার লোভে তিনি টাকা লগ্নি করতে রাজি হয়ে যান৷ অনলাইনেই তাঁকে লগ্নি করতে বলা হয়েছিল৷ প্রথমে কিছু টাকা লগ্নি করলে তাঁকে অল্প টাকা সুদ হিসাবে ফেরৎ দেওয়া হয়৷ এভাবে বিশ্বাস অর্জন করে ওই সাইবার জালিয়াতরা৷ এর পরই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে পুরো টাকাই হস্তগত করে নেয় তারা৷ এই একইভাবে বহু ব্যক্তির সঙ্গে জালিয়াতি করা হয়েছে৷ ফাঁদে পা দিয়ে এভাবেই কয়েক লাখ খুইয়েছেন অনেকে৷
ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের কাছে একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে৷ সেই সূত্র ধরে তদন্ত নেমে লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া বা রাজস্থানের ভরতপুরের পর এবার সাইবার জালিয়াতদের নতুন ‘হাব’ গডে় উঠেছে মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী ও ইন্দোরে৷ এখানে গ্রামের অনেক বাসিন্দা ‘কলার’ হিসাবে দেশের বিভিন্ন শহর ও রাজ্যের বাসিন্দাদের ফোন করে জালিয়াতির চেষ্টা করে৷ আবার তাদের পরিচিত লোকেরাই অ্যাকাউন্ট ভাড়া দিয়ে জালিয়াতির টাকা ভুয়ো বা ‘মিউল অ্যাকাউন্টে’টাকা পাঠায়৷
এছাড়াও পুলিশের চোখ এড়াতে এই ‘সাইবার জালিয়াতি হাব’-এর সদস্যরা বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে৷ তারা নজরদারি চালায় যে একসঙ্গে গাডি় করে বা পায়ে হেঁটে কেউ আসছে কি না৷ কোনও তল্লাশি শুরু করার আগেই গ্রামের মহিলা ও বয়স্করা এসে পুলিশের গাডি় ঘিরে নেয়৷ অভিযুক্ত সাইবার জালিয়াতদের ধরার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হয় পুলিশকর্মী ও আধিকারিকদের৷ সম্প্রতি হরিয়ানায় গিয়েও এরকম বাধার মুখে পডে়ন লালবাজারের গোয়েন্দারা৷