অতিবৃষ্টির কারণে বিপর্যস্ত উত্তর সিকিম সহ সে রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা। বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। গত তিন দিন ধরে মেঘভাঙা বৃষ্টির পর সোমবার আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এরই মধ্যে সিকিমের ছাতেনে ধস নেমে একটি সেনাক্যাম্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর সামনে এসেছে। রবিবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় তিন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ছয় জন। সোমবার আটক পর্যটকদের উদ্ধার কাছে হাত লাগিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও সেনাবাহিনী। উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন লাচুং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরাও।
ধসের ঘটনায় মৃত জওয়ানরা হলেন ল্যান্স নায়েক মনীষ ঠাকুর, হাবিলদার লাখবিন্দর সিং ও পোর্টার অভিষেক লাখাডা। নিখোঁজ রয়েছেন ছয়জন। তাঁরা হলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রীতপাল সান্ধু, তাঁর স্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত স্কোয়ার্ডন লিডার আরতি সান্ধু, তাঁদের মেয়ে আমাইরা সান্ধু, সুবেদার ধর্মবীর, সেপাই সাইনুধীন পিকে ও সেপাই সুনীলাল।
উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকায় রবিবার রাত পর্যন্ত ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। সোমবার সকালে বিভিন্ন জায়গায় রোদের দেখা মেলায় শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। সকাল থেকে লাচুঙে আটকে থাকা পর্যটকদের নামিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। তবে লাচেন থেকে পর্যটকদের নামিয়ে আনার কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছে সেনাবাহিনীকে। তাঁদের নামিয়ে আনতে বিকল্প পথ ও উপায় খুঁজছে প্রশাসন। পর্যটকদের গাড়িতে করে নিচে নামিয়ে আনা হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, প্রশাসনের পাশাপাশি উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয় লাচুংপা সম্প্রদায়ের মানুষজনও। এই সম্প্রদায়ের অনেক মানুষ স্থানীয় হোটেলের মালিক। সোমবার সকালে আটকে থাকা পর্যটকদের ব্যাগ বয়ে গাড়িতে তুলে দিতে দেখা যায় হোটেলের মালিকদের।
শনিবার সিকিম প্রশাসন জানিয়েছে, প্রায় দেড় হাজার পর্যটক দুর্যোগের কারণে সিকিমের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে আটকে পড়েছেন। সিকিম সরকারের পক্ষ থেকে আগেই তাঁদের হোটেল বা হোমস্টেতে আপাতত থেকে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে উত্তর সিকিমের অনেক জায়গাতেই বিদ্যুতের সমস্যা রয়েছে। চুংথাঙে জলের সমস্যায় জর্জরিত সাধারণ মানুষ।
এই বিষয়ে মঙ্গনের জেলাশাসক অনন্ত জৈন জানিয়েছেন, পর্যটকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। তাঁদের গ্যাংটকে ফেরানোর কাজ চলছে। ধসে মৃতদের উদ্ধারকাজও শুরু হয়েছে।