বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন একই পরিবারের ৫ জন। রবিবার সকালে গুজরাতের আহমেদাবাদ জেলার বাভলা তালুকের বাগোডরা গ্রামের ভাড়াবাড়ি থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরিকল্পনা করেই বিষ খেয়ে সকলে আত্মঘাতী হয়েছেন। আহমেদাবাদ পুলিশ সুপার ওমপ্রকাশ জাট জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, সকলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে আসল কারণ জানার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে।
মর্মান্তিক এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তদন্তকারীরা মৃতদের প্রতিবেশী এবং আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা বলছেন। পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে খবর, একজন যুবক, তাঁর স্বামী এবং ওই দম্পত্তির তিন সন্তান বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁরা সকলেই বাগোডরা গ্রামে ভাড়া থাকতেন। ওই যুবক অটো চালিয়ে সংসারের খরচ চালাতেন। কেন তাঁরা এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা জানার জন্য তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
বাগোডরা গ্রামে বাসস্ট্যান্ডের কাছে ভাড়া থাকত ওই পরিবার। রবিবার সকালে তাঁদের কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন বাড়ির মালিক খোঁজ নিতে যান। তিনি গিয়ে দেখেন, পাঁচজনের দেহ মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। এরপর তিনি পুলিশে খবর দেন। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের নাম – বিপুল বাঘেলা (৩২), তাঁর স্ত্রী সোনল (২৬), তাঁদের সন্তাম করিনা (১১), ময়ূর (৮) এবং প্রিন্সেস (৫)। বাগোডরা থানার পুলিশ দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, দম্পতি খাবারের মধ্যে বিষ মিশিয়ে নিজেরা খান ও সন্তানদেরও খাওয়ান। ময়নাতদন্তেই জানা যাবে, পাঁচজনের মৃত্যুর আসল কারণ। তবে ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কেন ওই পরিবারের সদস্যরা আত্মহত্যা করলেন, সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তবে আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে পরিবারটি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জানার চেষ্টা চলছে।
বিপুল সংসারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। মৃতের আত্মীয়স্বজনরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি সাংঘাতিক আর্থিক চাপে ছিলেন বিপুল। তাঁর শ্যালক জানান, ধার করে অটোরিকশা কিনেছিলেন বিপুল। সেই ইএমআই শোধের জন্য সাংঘাতিক চাপে ছিলেন তিনি। যদিও তিনি সম্প্রতি ৫০০০ টাকা শোধও করেছিলেন। ঋণের বোঝাই কি তাঁকে পরিবার সহ এমন চরম পরিণতির দিকে ঠেলে দিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে ঋণের দায়ে জর্জরিত হওয়ার কারণে চরম পরিণতি বেছে নেয় কলকাতার ট্যাংরার বাসিন্দা দে পরিবার। অভিযোগ, সেই পরিবারের কর্তা দুই ভাই প্রণয় ও প্রসূন নিজেদের স্ত্রী ও কন্যাকে হত্যার পরে গাড়ি নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। খুন হন প্রণয়ের স্ত্রী সুদেষ্ণা, প্রসূনের স্ত্রী রোমি এবং প্রসূনের ১৪ বছরের কন্যা। দুর্ঘটনা সত্ত্বেও প্রাণ বেঁচে যান দুই ভাই প্রণয় দে, প্রসূন দে এবং প্রণয়ের কিশোর পুত্র।