• facebook
  • twitter
Monday, 15 December, 2025

লিবিয়ায় পণবন্দি গুজরাতের দম্পতি ও তিন বছরের কন্যা

দু’কোটি টাকার মুক্তিপণ দাবি

প্রতীকী চিত্র

ইউরোপে স্থায়ীভাবে বসবাসের স্বপ্ন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলা হল গুজরাতের এক পরিবারকে। লিবিয়ায় অপহৃত হয়েছেন গুজরাতের মেহসানা জেলার দম্পতি কিসমতসিংহ চাভদা ও হিনাবেন চাভদা। তাঁদের সঙ্গে বন্দি রয়েছে মাত্র তিন বছরের কন্যাসন্তান দেবাংশিও। সংবাদসংস্থার এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, অপহরণকারীরা পরিবারের কাছে দু’কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেহসানার বাদলপুরা গ্রামের বাসিন্দা চাভদা পরিবার ইউরোপীয় কোনও দেশে স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে চেয়েছিল। সেই লক্ষ্যেই পর্তুগালের এক এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁদের বলা হয়েছিল, পর্তুগালে পৌঁছে দেওয়া হবে এবং সেখানে থাকার বন্দোবস্তও করে দেওয়া হবে। সেই আশাতেই গত ২৯ নভেম্বর অহমদাবাদ থেকে বিমানে দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেয় পরিবারটি।

Advertisement

মেহসানার পুলিশ সুপার হিমাংশু সোলাঙ্কি জানান, দুবাই পৌঁছনোর পরে ওই পরিবারকে লিবিয়ার বেনগাজি শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, বেনগাজিতে পৌঁছোনোর পরই কিসমতসিংহ, হিনাবেন ও তাঁদের শিশুকন্যাকে অপহরণ করা হয়। এরপর থেকেই তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ দাবি করছে অপহরণকারীরা।

Advertisement

হিমাংশু সোলাঙ্কির কথায়, ‘অপহরণকারীরা মেহসানায় কিসমতসিংহের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। দু’কোটি টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানার পরেই পুলিশ তৎপর হয়েছে।’ ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট মেহসানার জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় বিধায়ক সিজে চাভদা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘পরিবারটির সঙ্গে যা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমি রাজ্য এবং কেন্দ্র— দু’পক্ষকেই বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত কোনও সমাধানসূত্র বেরোবে।’
জেলাশাসক প্রজাপতি জানান, অপহৃত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে এবং গোটা বিষয়টি বিদেশ মন্ত্রকের নজরে আনা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এটি প্রথম ঘটনা নয়। চলতি বছরের অক্টোবর মাসেও গুজরাতের গান্ধীনগরের দুই গ্রামের দুই পরিবারের চার সদস্যের সঙ্গে একই ধরনের প্রতারণা হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁদের ইরানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে বন্দি করে রাখা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপে তাঁরা মুক্তি পান।

লিবিয়ায় চাভদা পরিবারের অপহরণের ঘটনায় ফের একবার বিদেশে কাজ ও বসবাসের স্বপ্ন দেখিয়ে মানবপাচার ও প্রতারণা চক্রের ভয়াবহ চেহারা সামনে এল। প্রশাসনের তরফে দ্রুত পদক্ষেপের আশায় দিন গুনছে পরিবারটি।

Advertisement