১০ বছর ধরে অত্যাচারিত গোয়াবাসী, এবার হবে উন্নয়ন: মমতা

আগামী ২৮ অক্টোবর গোয়া সফরে যাচ্ছি। বিজেপিকে রুখতে প্রত্যেক দল, ব্যক্তি, সংস্থাকে এক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা সবাই একসঙ্গে গোয়ায় নতুন সরার তৈরি করব।

Written by SNS Kolkata | October 24, 2021 4:35 pm

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ছবিঃএসএনএস)

এবার নিজেই গোয়ায় যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে ট্যুইটে বিজেপি বিরোধী জোটের আহ্বান জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো। উত্তরবঙ্গ সফর সেরে গোয়া যাওয়ার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

ট্যুইটে মমতা লেখেন, ‘আগামী ২৮ অক্টোবর গোয়া সফরে যাচ্ছি। বিজেপিকে রুখতে প্রত্যেক দল, ব্যক্তি, সংস্থাকে এক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা সবাই একসঙ্গে গোয়ায় নতুন সরার তৈরি করব।

গত ১০ বছর ধরে গোয়ার মানুষ অনেক কষ্ট সহ্য করেছে। নতুন সরকার গোয়ার মানুষের মন বুঝে উন্নয়নের লক্ষ্যেই কাজ করবে। সাগরপারে নিজেদের সংগঠনকে শক্ত করতে কোমর বেঁধে নেমেছে শাসক দল তৃণমুল কংগ্রেস।

ইতিমধ্যেই সে রাজ্য ছেয়েছে তৃণমুলের হোর্ডিং, ব্যানারে। বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাটআউটও। বিজয় দশমীতে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েনের উপস্থিতিতে পানাজিতে ঘাসফুল শিবিরের কার্যালয় উদ্বোধন হয়।

ওইদিন প্রাক্তন আপ এবং প্রাক্তন কংগ্রেস মুখপাত্র স্বাতী কেরকার এবং জয়েশ শেঠ গোয়ানকার যোগ দেন তৃণমুলে। জয়েশ শেঠ গোয়ানকারও প্রাক্তন আপ নেতা ছিলেন। বিজেপি ছেড়েও তৃণমূলে যোগের হিড়িক লেগেছে বিজেপির মহিলা মোর্চার এক্সিকিউটিভ কমিটির প্রাক্তন সদস্য দীক্ষা তালবেনকারও ঘাসফুল শিবিরের পতাকা হাতে নিয়েছেন।

তার আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর কলকাতায় এসে তৃণমূলে যোগ দেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফ্যালেইরো। সঙ্গে ছিলেন আরও ৬ জন প্রাক্তন বিধায়ক। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরপরই জাতীয়স্তরে নতুন পদও পান। তাকে দলের জাতীয় সহসভাপতি হিসেবে নিয়োগ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।

রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দলবদলের পর তৃণমুলের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়েছে। থাকাকালীন ফেলারিও উত্তর-পূর্ব ভারতের গোয়ায় তৃণমূলের টানা কর্মসূচি: আগামী বছর ২০২২ সালে গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন।

সেখানেই বিজেপির বিপক্ষে শক্তিশালী দল হিসেবে উঠে আসতে চাইছে তৃণমুল। ২৮ তারিখ গোয়া সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগেই সেখানে নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দেবে দলীয় নেতৃত্ব গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলারিওকে সর্বভারতীয় সহসভাপতির পদে বসানো হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে ফেলারিকে দ্গীয় পদে আনার পেছনে বড় কারণ রয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। কংগ্রেসে একাধিক রাজ্যে দলের দায়িত্ব সামলেছেন। মিজোরামে একবার কংগ্রেসকে ক্ষমতায়ও এনেছেন।

ফলে তাঁকে উত্তর-পূর্বের কংগ্রেসকেও ভাঙানো সম্ভব। গোয়ায় সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে জোর দিয়েছে তৃণমূল। পুজোর মধ্য দশমীর দিন গোয়ায় প্রথম দলীয় দফতর খোলা হয়েছে। ২৮ তারিখে গোয়ায় যাবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেখানে তিন দিনের কর্মসূচি আছে। গোয়া বিধানসভা ভোটের মুখে মমতার ওই সফরের পিছনে বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন। ইতিমধ্যে সে রাজ্যে নির্বাচনী প্রচার শুরু করার কথা জানিয়েছেন তৃণমূল।

টানা কর্মসূচি আছে টিম অভিষেকের।তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী সোমবার থেকে গোয়ায় নির্বাচনী প্রচার শুরু করবে। তাছাড়াও একাধিক সাংগঠনিক বৈঠক হবে গোয়ায়। ওই কর্মসূচিতে থাকতে পারেন সাংসদ সৌগত রায় ও বাবুল সুপ্রিয়।

সেক্ষেত্রে তৃণমূলের হয়ে বাবুল সুপ্রিয়র এটাই প্রথম নির্বাচনী প্রচার হতে পারে। গোয়ায় এখন বর্ষীয়ান নেতা মানস ভুঁইয়া আছো ক’দিন যাবৎ। যাচ্ছেন চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেন। প্রচার চলছে হাটে-বাজারে। ত্রিপুরার মতো গোয়াতে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি একটু একটু করে বাড়ানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল।

তারই প্রথম পদক্ষেপ ফেলাইরো সহ কয়েকজন কংগ্রেস নেতাকে দলে টেনে আনা। এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী যাবেন সে রাজ্যে। গোয়াতে বিজেপির একমাত্র শক্তিশালী বিরোধী দল যে তৃণমূল, সেই বার্তাই পৌঁছে দেওয়া উদ্দেশ্য বলে মনে করছেন অনেকে।