• facebook
  • twitter
Saturday, 6 December, 2025

নেতাজির নামাঙ্কিত কলকাতা বিমানবন্দরে গান্ধি গ্যালারি

স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে নেতাজি ও গান্ধিজি সহ অবস্থানে ছিলেন না। কিন্তু এবার কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বােস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সহাবস্থান করবেন নেতাজি ও গান্ধিজি।

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বােস (Photo: SNS/File)

স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে নেতাজি ও গান্ধিজি সহ অবস্থানে ছিলেন না। কিন্তু এবার কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বােস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সহাবস্থান করবেন নেতাজি ও গান্ধিজি।

কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে এই বিমানবন্দরে ‘গান্ধি গ্যালারি’ তৈরি করা হয়েছে। দিল্লির গান্ধি স্মৃতি ও দর্শন কমিটির তত্ত্বাবধানে এই গ্যালারি তৈরি হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এই গ্যালারির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে বলে জানান, কলকাতার এয়ারপাের্ট অথরিটির ডিরেক্টর কৌশিক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, গান্ধিজির সার্ধশত জন্মবর্ষ উপলক্ষে বিভিন্ন বিমানবন্দরে এই ধরনের গান্ধিজির স্মারক গড়ে তােলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রতি অবমাননা করা হচ্ছে বলে মনে করছেন নেতাজি অনুগামীরা। তাঁদের বক্তব্য, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জনমত নেওয়া উচিত ছিল। আসমুদ্র হিমাচলে গান্ধিজির বহু স্মৃতি সৌধ আছে। তাছাড়া মােদি সরকারের উদ্যোগে এবছর আরও অনেক স্মারক তৈরি করা হচ্ছে দেশজুড়ে। কিন্তু কলকাতা শহরে এই বিমানবন্দর এবং একটি মেট্রো স্টেশন ছাড়া নেতাজির নামাঙ্কিত তেমন আর কিছুই নেই।

Advertisement

এমনিতেই বহু আন্দোলনের পর ১৯৯৭ সালে কলকাতা বিমানবন্দরের নামকরণ করা হয় নেতাজির নামে। সেখানে গান্ধি গ্যালারিকে জায়গা করে দেওয়ার অর্থ নেতাজির অবদানকে খাটো করা। অথচ অখণ্ড ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল নেতাজির।

বাবা সাহেব আম্বেদকর বলেছিলেন, ইংরেজ ভারত ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্য। তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লর্ড অ্যাটলিও জানিয়েছিলেন ১৯৪৬ সালে, ব্রিটিশরা ভারত ত্যাগ করেছিল, সুভাষচন্দ্র বােসের আইএনএ’র আন্দোলনের জন্য, গান্ধিজির ভারত ছাড়াে আন্দোলনের জন্য নয়। দেশ বিদেশের বহু মানুষের কাছে নেতাজি স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পুরােধা হিসেবে খ্যাত হলেও এই দেশে তিনি এখনও উপেক্ষিত।

নেতাজি অনুগামীদের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন, কলকাতা বিমানবন্দরে যদি গ্যালারি করতেই হয়, তাহলে নেতাজি সুভাষচন্দ্রের নামে করা উচিত ছিল। দেশ বিদেশ থেকে আসা বহু মানুষ এই বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করেন। সেখানে নেতাজির নামে কোনও স্মারক গ্যালারি তৈরি না করে গান্ধিজির নামে গ্যালারি স্থাপন অন্য বার্তা দেবে। এটা নেতাজিকে বিস্মরণের পথে ঠেলে দেওয়ার একটা সুক্ষ্ম চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।

অনেকের আশংকা, বিভিন্ন মার্গ এবং রেল স্টেশনের নাম পরিবর্তনের মতাে ভবিষ্যতে কলকাতার সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামও পরিবর্তন করে ফেলা হবে না তাে? এয়ারপাের্ট অথরিটির সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিরেক্টর কৌশিক ভট্টাচার্য অবশ্য এমন আশংকার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন।

Advertisement