বাংলাদেশকে আর বিদ্যুতের জন্য কোনও ছাড় দিতে রাজি নয় ভারতের আদানি গোষ্ঠী। সংবাদ সংস্থা সুত্রে খবর, বিদ্যুৎ সংক্রান্ত টাকা আরও কিছুদিন বকেয়া রাখতে আদানি গোষ্ঠীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। তবে মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের সেই আবেদন সম্পূর্ণভাবে খারিজ করে দিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। বিদ্যুৎ বকেয়া মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করা হচ্ছে। এই দাবি জানিয়েই ভারতের আদানি গোষ্ঠীকে দুই ইউনিট থেকে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছিল বাংলাদেশ। সেইসঙ্গে অনুরোধ ছিল, বিদ্যুতে বাড়তি ছাড় দেওয়ার। সুত্রের খবর, বাংলাদেশে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহে রাজি হলেও কোনওরকম বাড়তি ছাড় দিতে রাজি নয় ভারতের বিদ্যুৎ সংস্থা আদানি পাওয়ার।
ঝাড়খণ্ডের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র থেকে সমগ্র বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে আদানি পাওয়ার। ২০১৭ সালের বিদ্যুৎ চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশকে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করত আদানি। তবে দীর্ঘদিনের বিদ্যুৎ বাবদ বকেয়ার কথা মাথায় রেখে গত বছরের অক্টোবরে আমদানিকৃত বিদ্যুতের পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে দেয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বাংলাদেশের কাছে আদানিদের বিদ্যুতের খরচ বাবদ বকেয়া রয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি।
বিশাল অঙ্কের বকেয়া এবং শীত মরশুমে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় বাংলাদেশের সিদ্ধান্তে ঝাড়খণ্ডের একটি ইউনিট থেকে অর্ধেকেরও কম পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে আদানি। তবে সম্প্রতি গরম বাড়তে থাকায় মাসিক কিস্তিতে বকেয়া মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফের দুই ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে বাড়তি কর ছাড় এবং মোট বকেয়া অর্থে ছাড়ের অনুরোধ করেছিল ঢাকা। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংস্থা বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড আদানি পাওয়ার কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু তা খারিজ করা হয়েছে।
আদানি পাওয়ার জানিয়েছে, বাংলাদেশে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ পাঠানো হবে ঠিকই কিন্তু বকেয়া অর্থের পুরোটাই বাংলাদেশকে শোধ করতে হবে। অতিরিক্ত কোনও ছাড়ও দেওয়া যাবে না। সূত্রের খবর, আদানিরা এবার বিদ্যুতের দামের উপর বাংলাদেশকে ন্যূনতম ছাড় দিতেও রাজি নয়। বিপিডিবি-র তরফে আদানি সংস্থাকে বার বার বোঝানো হলেও ছাড় দিতে রাজি নয় তারা।
পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ বকেয়া শোধ করার জন্য আদানি গোষ্ঠী তাড়া দিয়েছে বাংলাদেশকে। অক্টোবরে তারা একটি চিঠি দেয় বিপিডিবি-কে। জানানো হয়, টাকা না মেটালে চুক্তির শর্ত মেনে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে। তিন মাস অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রইল। আবার সম্পূর্ণ সরবরাহ চালু হচ্ছে। গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে বিপিডিবি-র সঙ্গে আদানি পাওয়ারের আধিকারিকদের বৈঠক হয় বলে জানা গিয়েছে।
এক বিবৃতিতে বিপিডিবি-র চেয়ারম্যান মহম্মদ রেজাউল করিম জানিয়েছিলেন, , মাসিক কিস্তিতে ভারতের আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ বকেয়া মেটানোর পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। আগামী দিনে মাসিক কিস্তির অর্থের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দ্রুত ভারতের বিদ্যুৎ ঋণ শোধ করবে তারা।