ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও মজবুত করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই লক্ষ্যেই আরও এক ধাপ এগোল দিল্লি। তৈরি করা হল ‘অগ্নি প্রাইম’ ক্ষেপণাস্ত্র। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র। বৃহস্পতিবার সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয় ‘অগ্নি প্রাইম’ ক্ষেপণাস্ত্রটি। ডিআরডিও ওড়িশার চাঁদিপুর থেকে একটি রেল মোবাইল লঞ্চার থেকে এটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ২০০০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রটির আওতায় পড়ছে পাকিস্তান এবং চিনের অধিকাংশ অঞ্চল। ডিআরডিও জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা সফল হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র সফল উৎক্ষেপণের পরই ডিআরডিও-কে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। রাজনাথ তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘রেল-বেসড মোবাইল লঞ্চার সিস্টেমের উপর নির্ভরশীল অগ্নি প্রাইমের সফল উৎক্ষেপণ করেছে ভারত। ২০০০ কিলোমিটার পাল্লার বিশেষ এই মিসাইলটিতে একাধিক অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই প্রথম ট্রেন থেকে কোনও ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ হল, যার জন্য ডিআরডিও-কে অভিনন্দন জানাই।’
Advertisement
দুই ধরনের জ্বালানি ব্যবহার করতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্রটি। এতে অত্যাধুনিক ইনর্শিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম রয়েছে, যা লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত করতে সক্ষম। অগ্নি-১ এবং অগ্নি-২ ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় অগ্নি প্রাইম হালকা, আরও আধুনিক এবং প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত।
Advertisement
চলমান লঞ্চিং প্যাড থেকে ‘অগ্নি প্রাইম’-এর সফল উৎক্ষেপণ করা হয়। এই ব্যবস্থাটিকে বলা হয় ‘রেল-বেসড মোবাইল লঞ্চার সিস্টেম’। চলন্ত ট্রেন থেকেই শত্রুপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে ক্ষেপণাস্ত্রটি। এই ধরনের ব্যবস্থা চিন-রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার মতো দেশে থাকলেও আমাদের দেশে ছিল না। এবার ভারতেও চলে এল ‘রেল-বেসড মোবাইল লঞ্চার সিস্টেম’। দেশের যেখানে যেখানে রেলপথ রয়েছে, সেখান থেকেই এই মিসাইলটিকে উৎক্ষেপণ করা যাবে।
প্রসঙ্গত, রেল লঞ্চার সিস্টেম এক ধরনের বিশেষ উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা। রেল ইঞ্জিনের সঙ্গে একটি পণ্যবাহী ট্রেনের বগির মতো দেখতে উৎক্ষেপণ ব্যবস্থাকে জুড়ে দেওয়া হয়, যা বাইরে থেকে কোনও ভাবেই বোঝা সম্ভব নয় যে, এটি একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা। সাধারণ পণ্যবাহী ট্রেনের মতোই মনে হবে। এতদিন পর্যন্ত স্থিতিশীল লঞ্চিং প্যাডের মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা হত। এ বার চলমান লঞ্চিং প্যাডের মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া শুরু হল।
রেল মোবাইল লঞ্চারের বেশ কয়েকটি সুবিধাও রয়েছে। এই মিসাইলটিকে দেশের রেল যোগাযোগকারী যে কোনও জায়গায় অনায়াসে নিয়ে যাওয়া যাবে। ফলে শত্রুপক্ষের নজর সহজে এড়ানো সম্ভব। চলতে চলতেই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো যাবে। এটিকে এমনভাবে বানানো হয়েছে যে, ট্রেনের ভিড়ে সহজে মিশে শত্রুপক্ষের নজর এড়াতে পারবে।
Advertisement



