ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি ও অপারেশন সিঁদুর নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির দাবি ঘিরে সংসদে সরকারের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ জানালেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর সাফ কথা, ‘ট্রাম্প যা বলছেন, সেটাই সত্যি। প্রধানমন্ত্রী মোদী নীরব, কারণ তিনি কিছু বললেই সত্যিটা প্রকাশ্যে চলে আসবে।’
বুধবার সংসদ ভবনের চত্বরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘একদিকে কেন্দ্রীয় সরকার বলছে অপারেশন সিঁদুর চলছে, আবার বলছে আমরা জিতে গিয়েছি। আবার ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৫ বার বলেছেন, তিনিই যুদ্ধ থামিয়েছেন। ডাল মে কুছ না কুছ কালা হ্যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কোনও বিবৃতি দিতে পারছেন না, কারণ দিলে সত্যিটা বেরিয়ে পড়বে।’
উল্লেখ্য, পহেলগাম হামলার জবাবে ৬ মে রাতে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালু করে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। পাল্টা জবাব দেয় ইসলামাবাদ। দু’দেশের মধ্যে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর ঠিক চারদিন পর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ‘আমিই দুই দেশকে থামিয়েছি।’ তিনি দাবি করেন, বাণিজ্যচুক্তির চাপ প্রয়োগ করে ভারত ও পাকিস্তান – উভয়কে সংঘর্ষ থামাতে রাজি করিয়েছেন।
Advertisement
ভারত সরকার যদিও ট্রাম্পের এই দাবি সরাসরি খারিজ করেছে। নয়াদিল্লির মতে, পাকিস্তানের তরফে সংঘর্ষবিরতির আবেদন আসে এবং এই সিদ্ধান্ত একান্তভাবে দ্বিপাক্ষিক। যদিও ওয়াশিংটনের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার কথা সরকার স্বীকার করেছে, কিন্তু যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব আমেরিকাকে দিতে নারাজ।
Advertisement
অপারেশন সিঁদুর এবং যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর সংসদে বিবৃতি দাবি করছে। যদিও সরকার পক্ষ জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে ২৫ ঘণ্টা আলোচনার সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে তাতেও সন্তুষ্ট নয় বিরোধীরা। রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, ‘প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করেই সংসদে এ নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না।’
রাহুল গান্ধীর কটাক্ষ, অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারত কূটনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘এই সংঘাতে ভারতের পাশে দাঁড়ায়নি কোনও বড় দেশ। ট্রাম্পই বলছেন, তিনি যুদ্ধ থামিয়েছেন – আর প্রধানমন্ত্রী কিছু বলছেন না। এর মানে একটাই, সরকার সত্যিটা লুকোচ্ছে।’
এই বিতর্কের আবহেই আগামী সপ্তাহে সংসদে ঝড় উঠতে চলেছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যদি বিবৃতি না দেন, তাহলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
Advertisement



